হাসপাতালের সুপারের জবানবন্দির ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত বহিরাগত যুবকের ওটিতে ঢোকা নিয়ে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করল পুলিশ। চিকিৎসকের সহকারী সেজে অবৈধ ভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওটি -তে ঢুকে কাজ করছিলেন অভিযুক্ত যুবক নির্মল মণ্ডল। সেখান থেকেই তাঁকে ধরে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত দরে অস্ত্রোপচারে সরঞ্জাম সরবরাহ করার অভিযোগে প্রতারণার মামলাও হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। তবে ওটিতে ঢোকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁর নামে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ তা নথিভুক্ত না করায় প্রশ্ন ওঠে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন জানিয়েছিলেন বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন, “অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে তখনই তদন্তকারী পুলিশ আফিসারকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বয়ান নিয়ে তা নথিভুক্ত করতে বলেছিলাম। সে কাজ করা হয়েছে।” হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্র সরকার এই দিন জানিয়েছেন, পুলিশকে তিনি বিস্তারিত বলেছেন। উভয় অভিযোগই যাতে নথিভুক্ত হয় সেই আর্জিও তিনি জানিয়েছেন।
গত ১৪ মে, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কদমতলার এক বাসিন্দা ভারতী দাসের কোমরে অস্ত্রোপচারের জন্য ৫ হাজার টাকা দামের সরঞ্জাম ১৭ হাজার টাকায় সরবরাহ করা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে ধৃত নির্মল মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তাঁকে অস্ত্রোপচারের ঘরে চিকিৎসকের সহকারী হিসাবে কাজ করতে দেখায় প্রশ্ন ওঠে। এর ভিত্তিতে যুবকের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত দামে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম সরবরাহ করা এবং অবৈধ ভাবে ওটিতে ঢোকা দু’টি অভিযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ ধৃতের বিরুদ্ধে নালিশ নিজেদের মতো করে সুপারকে দিয়ে দ্বিতীয় বার লিখিয়ে নেয় বলে প্রশ্ন ওঠে। সেখানে প্রতারণার মামলাটি থাকলেও ওটিতে প্রবেশের বিষয়টি রাখা হয়নি বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত যুবক নির্মল মণ্ডল অবশ্য দাবি করেছিলেন, সরঞ্জাম ঠিক মতো লাগানোয় সাহায্য করতে চিকিৎসক তাঁকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেন। গত ৬ মাস ধরেই তিনি এ ভাবে কাজ করছেন। ওই চিকিৎসক শুভাশিসরঞ্জন মিত্রের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্র সরকার জানান, তাঁরা কাউকে এমন অনুমতি দেননি। এই ঘটনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠক ডাকলে সেখানে সকলে ঘটনার নিন্দা করেন। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষও চান অবৈধ ভাবে ওটিতে ঢোকার বিষয় পুলিশ নথিভুক্ত করুক।
ঘটনার তদন্তের জন্য হাসপাতালের তরফেও ৩ জনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ঘটনার দিন রাতেই কলকাতায় চলে যান। দু’ দিন পরে পরিচিত এক জুনিয়র চিকিৎসকের মাধ্যমে তিনি ই-মেলের একটি প্রতিলিপি সুপারের কাছে পৌঁছে দেন। তাতে কী কারণে তিনি ছুটি নেন তা জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy