মেঝেতেই চিকিৎসা। খড়্গপুরে। —নিজস্ব চিত্র
বছর ঘুরলেই পুরভোট। তার আগে ডায়েরিয়া নিয়ে আকচা-আকচি শুরু হয়েছে খড়্গপুরে। তৃণমূলের পরে এ বার কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে সরব হল বিজেপিও। এ দিকে, রবিবার নতুন করে চার আক্রান্তকে ভর্তি করানো হয়েছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে খড়্গপুর পুর-এলাকার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এখনও পর্যন্ত এতে ১৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। জলবাহিত রোগ পুরসভার নল বাহিত পানীয় জল থেকেই হয়েছে বলে দাবি বিজেপিরও। যদিও পুরপ্রধান তা অস্বীকার করেছেন।
রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা জেলার জলবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “জনস্বাস্থ্য দফতর থেকে পানীয় জলের পাউচ বিলি করা হচ্ছে। আজ, সোমবার স্বাস্থ্য দফতর ওই এলাকায় একটি আলোচনা সভা করবে।” খড়্গপুর হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার নতুন করে কয়েক জন ভর্তি হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। যাঁদের ছাড়া হয়েছে, তাঁদের জল ফুটিয়ে খেতে বলা হয়েছে।”
মূলত খড়্গপুর শহরের রাজগ্রাম, লালডাঙা, বেলডাঙা, শ্রীকৃষ্ণপুর, মন্দিরতলা এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রথম প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বাড়িতে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা করেও ফল না মেলার হাসপাতালে ভর্তির হিড়িক বাড়ে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ১২৩ জন আক্রান্তকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, রেল হাসপাতাল ও স্থানীয় দু’টি নার্সিংহোম ভর্তি করানো হয়। শুধুমাত্র খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালেই ভর্তি হন ৮১ জন। এঁদের মধ্যে ৬ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। যদিও হাসপাতালে চিকিৎসার পরে শনিবারই অধিকাংশ আক্রান্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রবিবার দুপুর অবধি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ১৮ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ দিনই নতুন করে আরও দু’জন মহিলা ও একটি শিশু-সহ ৬ জন ভর্তি হন। তবে অনেকের বাড়িতে চিকিৎসা চলছে।
এ দিকে, সংক্রমণ ছড়ানো দু’টি ওয়ার্ডের একটি তৃণমূল ও অন্যটি কংগ্রেসের দখলে। আক্রান্ত হওয়ার পরেই সরব হয়েছিলেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দীপেন্দু পাল। জল পরিশোধন না হওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। জল থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে, এমনটা বলেছিল স্বাস্থ্য দফতরও। এর পরেই চাপের মুখে শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেছিলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সংগৃহিত নমুনায় নলবাহিত জলে জীবাণু-র অস্তিত্ত্ব মেলেনি।’ তিনি দাবি করেন, এলাকার একটি পুকুর থেকেই এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “পুকুরের কথা তুলে দায় এড়াতে চাইছে পুর-কর্তৃপক্ষ।” রবীন্দ্রনাথ প্রধান-ও বলেন, “জনস্বাস্থ্য দফতরের জলের নমুনা রিপোর্ট পাইনি। তবে একটি পুকুরের জলে এতগুলি মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন না।”
লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর সদর বিধানসভায় কংগ্রেসকে চতুর্থ স্থানে ফেলে প্রথমস্থানে এসেছে বিজেপি। পুরভোটের আগে স্বাভাবিক ভাবে এই ঘটনায় সুর চড়িয়েছে তাঁরাও। বিজেপি কাউন্সিলর বেলারানি অধিকারী অভিযোগ করেন, এর দায় পুরবোর্ড এড়াতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy