Advertisement
E-Paper

পড়াবে কে, নয়া মেডিক্যালের প্রস্তাব ঘিরে প্রশ্ন

শিক্ষক কোথা থেকে মিলবে তার ঠিক নেই, এ বার বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও মেডিক্যাল কলেজ খোলার জন্য আহ্বান জানাল স্বাস্থ্য দফতর। শুক্রবার ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এক আলোচনাচক্রে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে রাজ্যে আরও মেডিক্যাল কলেজ খোলার আহ্বান জানিয়েছেন। আর তার পরেই ফের স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে পুরনো প্রশ্নটাই মাথাচাড়া দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০১

শিক্ষক কোথা থেকে মিলবে তার ঠিক নেই, এ বার বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও মেডিক্যাল কলেজ খোলার জন্য আহ্বান জানাল স্বাস্থ্য দফতর।

শুক্রবার ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এক আলোচনাচক্রে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে রাজ্যে আরও মেডিক্যাল কলেজ খোলার আহ্বান জানিয়েছেন। আর তার পরেই ফের স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে পুরনো প্রশ্নটাই মাথাচাড়া দিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকেরই প্রশ্ন, নতুন মেডিক্যাল কলেজ খুলে সেখানে শিক্ষার মান যথাযথ রাখা যাবে তো?

এমন প্রশ্ন উঠছে কেন? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে এখন যে ক’টা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে, সেখানেই শিক্ষক জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য। দিনকে দিন ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত কমছে। কম শিক্ষককে দিয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী পড়ানোয় মান কমে যাচ্ছে। তাই শিক্ষকের ব্যবস্থা না করে নতুন মেডিক্যাল কলেজ খোলার যুক্তি কী, সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন স্বাস্থ্যকর্তারাই। তাঁদের অনেকেরই মত, নতুন মেডিক্যাল কলেজের পিছনে না ঘুরে আগে রাজ্যে মেডিক্যাল শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা ভাবতে হবে।

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)-র পরিদর্শনের সময়ে কোনও হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার দেখাতে পারি না আমরা। এক কলেজের জন্য অন্য কলেজ থেকে ডাক্তার ধার করে এনে কুমীর ছানা দেখানোর মতো ট্র্যাডিশন চলছে বছরের পর বছর।” এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) চারটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ খোলা হচ্ছে। সেখানে কোথা থেকে শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগ হবে, তা নিয়েও স্বাস্থ্যকর্তারা আতান্তরে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসচিব এ দিন বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধারদের রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ খোলার আহ্বান জানানোয় চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা।

এ দিন স্বাস্থ্যসচিব বলেন, “কল্যাণীতে এইমস খোলা হবে। সেখানেও কিন্তু সব ডাক্তার বাইরে থেকে আসবেন না। এখানকার ডাক্তাররাই থাকবেন। ডাক্তারের সংখ্যাটাই আমাদের কাছে বড় সমস্যা।” স্বাস্থ্যসচিব জানান, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চাহিদা মেটাতে রাজ্যের ছ’টি জেলা হাসপাতালে ডিপ্লোমেট ইন ন্যাশনাল বোর্ড (ডিএনবি) কোর্স চালু করা হচ্ছে। মালদহ, উত্তরবঙ্গ এবং বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে স্নাতকোত্তর আসন বাড়ানো হবে।

কিন্তু নতুন মেডিক্যাল কলেজ এবং বর্তমান মেডিক্যাল কলেজ সব কিছুর জন্যই তো শিক্ষক দরকার। তা পাওয়া যাবে কোথা থেকে? স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “ঘাটতি মেটাতে শিক্ষক-চিকিৎসকদের অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৬৫ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার পুরো সমাধান হয়নি। এ ভাবে জোড়াতালি দিয়ে চালানোর ফলে পঠনপাঠনের মানের সঙ্গে আপস করা হচ্ছে, এ কথা ঠিক। কিন্তু এই মুহূর্তে আর কোনও বিকল্পও নেই।”

মেডিক্যাল শিক্ষকের অভাব পূরণ করতে কী করছে স্বাস্থ্য দফতর? স্বাস্থ্যসচিবের যুক্তি, “মেডিক্যাল কলেজ খুলতে উদ্যোগী হচ্ছি। স্নাতকোত্তর স্তরে আসন বাড়ানো হচ্ছে। সবই তো এ জন্যই।”

শুধু ডাক্তার নয়, নার্স এবং অন্যান্য বিভাগের প্রশিক্ষিত কর্মীরও যে রাজ্যে খুবই অভাব, সে কথাও এ দিন স্বীকার করে নিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব। নিজেদের হাসপাতালগুলির নার্সের চাহিদা মেটানোর জন্য বেসরকারি হাসপাতাল-কর্তাদের নার্সিং স্কুল ও কলেজ খোলারও প্রস্তাব দেন তিনি।

এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মার্কিন কনসাল জেনারেল হেলেন লাফাভ, আইসিসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট আদিত্য অগ্রবাল, আইসিসি-র ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিংহ প্রমুখ। আইসিসি-র হেলথ কেয়ার কোর গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান রূপক বড়ুয়া রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বের উপরে জোর দেন। তিনি বলেন, “এখনও বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা শহরকেন্দ্রিক। গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে তা একেবারেই পৌঁছতে পারেনি। স্বাস্থ্য বিমার আওতাতে এসেছেন ২০ শতাংশেরও কম মানুষ। সাধারণ মানুষের কাছে কম খরচে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াটাই এই মুহূর্তে সকলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।”

medical university malay de
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy