Advertisement
E-Paper

মেডিক্যালে তদন্তে ‘গাফিলতি’

চিকিৎসকের সহকারী হয়ে বহিরাগত যুবকের ওটিতে ঢোকা ও রোগিণীর পরিবারের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠল। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হলেও সেই প্রক্রিয়া যথাযথ ভাবে শুরু না হওয়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। অভিযুক্ত চিকিৎসককে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়েও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০১:২৭

চিকিৎসকের সহকারী হয়ে বহিরাগত যুবকের ওটিতে ঢোকা ও রোগিণীর পরিবারের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠল। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হলেও সেই প্রক্রিয়া যথাযথ ভাবে শুরু না হওয়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। অভিযুক্ত চিকিৎসককে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়েও।

গত ১৪ মে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কদমতলার বাসিন্দা ভারতী দাসের কোমরে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের ব্যবহৃত ৫ হাজার টাকা দামের সরঞ্জাম সরবরাহ করার জন্য ১৭ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে সরবরাহকারী নির্মল মণ্ডলের বিরুদ্ধে। অবিযোগ, চিকিৎসক রোগিণীর লোককে ওই ব্যক্তির ফোন নম্বর দিয়ে সরঞ্জাম কেনার জন্য যোগাযোগ করতে বলেছিলেন। অস্ত্রোপচারের সময় নির্ণল মণ্ডলকে চিকিৎসকের সহকারী সেজে ওটিতে দেখে রোগীর লোকরা হতবাক হন। মাত্রাতিরিক্ত দামে সরঞ্জাম সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চিকিৎসক যুক্ত বলে অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঘটনার পরের দিন ১৫ মে জরুরি বৈঠক ডেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়েছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৭-১০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছিল। এর পরেই অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন হাসপাতালের সুপার। তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানয়েছিলেন। অথচ বাস্তবে পাঁচ দিন কেটে গেলেও তদন্তের কাজ কিছুই এগোয়নি বলে হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনায় অর্থোপেডিক বিভাগের এক চিকিৎসক যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে হাসপাতালেরই স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে। হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্র সরকার বলেন, “তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়েই তদন্তের রিপোর্ট কমিটিকে দিতে বলা হয়েছে।”

হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন আইসিইউ বিভাগের দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক। তিনি দিন কয়েক আগে চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সোমবার তিনি ফিরেছেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত চিকিৎসক ছুটিতে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকেও কোনও দিনক্ষণ জানানো হয়নি। ওই চিকিৎসক শুভাশিসরঞ্জন মিত্র বলেন, “হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন জানালে সেই মতো হাসপাতালে উপস্থিত থাকব। আমিও চাই এই বিষয়টি তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা হোক।”

তদন্তের কাজে কর্তৃপক্ষের এই উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের আত্মীয়-পরিজনেরাও। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের একাংশও মনে করেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। তা ছাড়া চিকিৎসকের সহকারী সেজে ওই ভাবে কোনও বহিরাগতের অপারেশন থিয়েটারে থাকার বিষয়টি জরুরি বৈঠকে সকলেই নিন্দা করেছেন। তার পরেও ঘটনা খতিয়ে দেখার কাজে কেন দেরি করা হচ্ছে তা স্পষ্ট নয় বলেই অনেকেই জানিয়েছেন।

মাত্রাতিরিক্ত দামে সরঞ্জাম সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের একাংশের মদত রয়েছে বলেই স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই মনে করেন। তারাও জানান, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন হওয়ার অর্থ ওই ধরনের কাজ কারবারকে প্রশ্রয় দেওয়া। তাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার প্রবণতা বাড়বে। তাই অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

siliguri uttarbanga medical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy