Advertisement
E-Paper

মালদহে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি, অমিল রক্তপরীক্ষার কিট

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের সর্বস্তরে অব্যবস্থার বহর। রোগ নির্ণয় থেকে চিকিৎসা, এমনকী রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গাফিলতির ছাপ সর্বত্র। সব চাইতে মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে কিটের অভাব। মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য দফতরকে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১০০ জনের রক্তের নমুনা না পাওয়া পর্যন্ত ডেঙ্গি পরীক্ষার ম্যাক অ্যালাইজা কিট খোলা যাবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০৪
মালদহের কালিয়াচকের নয়াবস্তি গ্রামে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক বাসিন্দা। তার পরেও ওই গ্রামে জঞ্জাল সরাতে পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দাদের।—নিজস্ব চিত্র।

মালদহের কালিয়াচকের নয়াবস্তি গ্রামে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক বাসিন্দা। তার পরেও ওই গ্রামে জঞ্জাল সরাতে পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দাদের।—নিজস্ব চিত্র।

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের সর্বস্তরে অব্যবস্থার বহর। রোগ নির্ণয় থেকে চিকিৎসা, এমনকী রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গাফিলতির ছাপ সর্বত্র।

সব চাইতে মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে কিটের অভাব। মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য দফতরকে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১০০ জনের রক্তের নমুনা না পাওয়া পর্যন্ত ডেঙ্গি পরীক্ষার ম্যাক অ্যালাইজা কিট খোলা যাবে না। কারণ, একটি কিট দিয়ে ১০০ জনের পরীক্ষা করা যায়। ফলে জ্বরে আক্রান্ত যে ১৪ জন রোগীর রক্তের নমুনা সোমবার জমা পড়েছে, তাঁরা কবে রিপোর্ট পাবেন, কেউ জানেন না।

মালদহে ঠিক এই পরিস্থিতিই হয়েছিল সাম্প্রতিক এনসেফ্যালাইটিস সংক্রমণের সময়ে। পর্যাপ্ত কিট না থাকায় রোগ নির্ণয় হয়ে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হচ্ছিল। প্রাণসংশয় হয় বহু রোগীর। মাস দুয়েকের মধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখিয়ে দিল, শিক্ষা নেয়নি স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন।

গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর যে রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সোমবারেও তাঁদের রিপোর্ট মেলেনি। অথচ ডেঙ্গি যে তীব্র আকার নিয়েছে, তা স্পষ্ট। কালিয়াচকের নয়াবস্তিতে অন্তত দু’জন ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন গত সপ্তাহে।

রিপোর্ট না পাওয়াতে আক্রান্তদের চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে। তেমনই কোন এলাকায় রোগ বেশি হচ্ছে তা বোঝা না যাওয়ায় যথাযথ প্রতিরোধও হচ্ছে না। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ গত বৃহস্পতিবার জ্বরে আক্রান্ত যে ১০০ জনের রক্ত পরীক্ষা করেছিল সেই রিপোর্ট এখনও পাঠায়নি। তা পেলে জানা যাবে কেবল নয়াবস্তিতেই ডেঙ্গি ছড়িয়েছে না জেলার অন্য কোনও প্রান্তেও ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে।” জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানান, তিনিও রিপোর্ট পাননি।

কেন এত দেরি? সুপার মহম্মদ আব্দুর রসিদ বলেন, “আমি ছুটিতে। ডেপুটি সুপারকে জিজ্ঞাসা করুন।” ডেপুটি সুপার জ্যোতিষ দাস বলেন, “রিপোর্ট খাম বন্ধ হয়ে রয়েছে। আমি কিছুই বলতে পারব না।”

এ অবস্থায় রোগীর পরিজনেরা অনেকে নার্সিংহোম, বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল ক্লিনিকে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা (ইমিউনো ক্রোমাটোগ্রাফি) করাচ্ছেন। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহে মালদহ শহর-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্বর নিয়ে আসা ১৪৮ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছিল। ২৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।

কিন্তু কিট না থাকলে রোগ ধরা পড়বে কি করে? তাই মালদহ থেকে কলকাতা আসতে বাধ্য হচ্ছেন অসহায় রোগীদের অনেকেই। ইংরেজবাজার পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আশিস কুণ্ডু বলেন, “আমার এলাকার ডেঙ্গি আক্রান্ত এক বাসিন্দাকে দু’দিন আগে কলকাতা পাঠিয়েছি।”

dengue blood test kit maldah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy