Advertisement
E-Paper

রেফার করলেই বিক্ষোভ-হামলা, রোগী দেখা শিকেয় মাতৃসদনে

খিদিরপুর মাতৃসদনে প্রসব করবেন এক মহিলা। কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে এসএসকেএমে ‘রেফার’ করলেন। তাতেই ক্ষেপে উঠলেন রোগীর পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, মাতৃসদনটি এসএসকেএমের অঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও কেন প্রসব সংক্রান্ত পরিষেবা মিলবে না?

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৩

খিদিরপুর মাতৃসদনে প্রসব করবেন এক মহিলা। কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে এসএসকেএমে ‘রেফার’ করলেন। তাতেই ক্ষেপে উঠলেন রোগীর পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, মাতৃসদনটি এসএসকেএমের অঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও কেন প্রসব সংক্রান্ত পরিষেবা মিলবে না? এই দাবিতে গত আড়াই মাস ধরে একাধিক রেফার হওয়া রোগীর বাড়ির লোক চিকিৎসকদের উপর হামলা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাই গত শনিবার থেকে মাতৃসদনে রোগী দেখাই বন্ধ করে দিয়েছেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা।

এসএসকেএমের অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্রের মন্তব্য, “আমরা তো জেনেশুনে ডাক্তারদের বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারি না। আগে মাতৃসদনে প্রায় কোনও পরিষেবাই মিলত না। সিজারও কালেভদ্রে হত। এখন নিয়মিত প্রসব হচ্ছে। তাতেও মানুষ সন্তুষ্ট নন! নানা দাবি তুলে চিকিৎসকদের গায়ে হাত তুলছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”

সরকারি সূত্রে খবর, প্রসব-সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য ওই মাতৃসদনকে এসএসকেএমের স্ত্রী-রোগ বিভাগের ‘অ্যানেক্স’ হিসেবে ঘোষণা করা হয় লোকসভা ভোটের আগে। ঠিক হয়, এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা সেখানে গিয়ে প্রসব ও আউটডোর করবেন। কিন্তু রোগীর জটিলতা দেখা দিলে তাঁকে এসএসকেএমে পাঠানো হবে। কারণ, মাতৃসদনে জটিল রোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই, ব্লাডব্যাঙ্ক-সিসিইউ নেই, অ্যানেস্থেটিস্ট মাত্র এক জন। ডাক্তারদের অভিযোগ, লোকের ধারণা, মাতৃসদন এখন দ্বিতীয় এসএসকেএম। তাই এ সব কাণ্ড। গত এক মাস ধরে বিক্ষোভের ঘটনা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে বলে প্রায় আটটি চিঠি জমা পড়েছে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছে।

অভিযোগ, গত শুক্রবার এক রোগিণীকে রেফার করার প্রতিবাদে চিকিৎসকদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়, চড় মারা হয়, গায়ে হাত দেওয়া হয় মহিলা চিকিৎসকদেরও। তার পরেই নিরাপত্তার দাবিতে মাতৃসদনে চিকিৎসক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সর্বেশ্বর মণ্ডল বলেন, “মাতৃসদনে নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। তবে সেখানে পুলিশি বন্দোবস্ত থাকতে হবে।” সুপার প্রদীপ মিত্র অবশ্য বলছেন, “দু’জন লাঠিধারী কনস্টেবল বসিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান, যা পুরসভা করতে পারে। কারণ মাতৃসদন তাদেরই অধীনে।” তাই তিনি পুলিশকে কিছু জানাননি।

বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে পুরকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। মাতৃসদন-সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলির পুরপিতাদের চিঠি পাঠিয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। এসএসকেএমের কর্তাদের বৈঠকে ডেকেছি।” প্রসূতি ও শিশুদের জন্য গঠিত স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ টাস্ক-ফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারণা, “এই সব ঘটনার পিছনে এলাকার কিছু নার্সিংহোমের হাত রয়েছে। খিদিরপুর মাতৃসদনের হাল ফেরানোর চেষ্টা দেখে তারাই লোক লাগিয়ে গোলমাল পাকাচ্ছে।”

parijat bandyopadhyay matri sadan khidirpur patient refer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy