ভাতকুণ্ডার আবাসন। ছবি: বিকাশ মশান।
সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসন, না কি ভূত বাংলো, হঠাৎ দেখলে ঠাওর করা মুশকিল!
জানালা আছে তো দরজা নেই। ভেঙে পড়ছে ছাদ। পলেস্তারা খসে কোথাও দেওয়াল ভরে উঠেছে লতা-গুল্মে। কোনওটার বাইরে আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়ে বড় বড় গাছ। চারপাশ আগাছার জঙ্গলে ছেয়ে যাওয়ায় সাপের উপদ্রবও বাড়ছে দিন দিন। যত্রতত্র, যখন-তখন গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়ালের অবাধ যাতায়াত।
বেহাল এই চিত্র বুদবুদের দেবশালা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভাতকুণ্ডা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসনগুলির। স্রেফ সরকারি উদাসীনতার কারণেই আবাসনগুলি পরিত্যক্ত, অভিযোগ এলাকাবাসীর। বছরের পর বছর ব্যবহার না হওয়ায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে সেগুলি। এলাকার বাসিন্দা দশরথ বাগদি জানান, এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কোনও পাঁচিল নেই। তাই বহিরাগতদের প্রবেশ অবাধ। জঙ্গল সাফ করে, পুনরায় সংস্কার করে ব্যবহারের উপযোগী করলে অবশ্য স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকতে পারবেন আগের মতো।
এক সময়ে আবাসনগুলিতে চিকিৎসক থেকে নার্স, সকলেরই বাস ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে আগে ছ’টি শয্যা ছিল। তখন এখানে নানা অস্ত্রোপচারও হত। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসবার থাকার জন্য কেন্দ্রের সীমানার মধ্যেই বেশ কয়েকটি আবাসন তৈরি করা হয়। কিন্তু তার পরে দীর্ঘ দিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বেহাল হতে শুরু করে। কর্মীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় থাকার লোকও কমতে থাকে। আবাসনগুলির অযত্নে পড়ে থাকা শুরু তখন থেকেই। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই পরিস্থিতি।
এলাকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষের ভরসা এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখানে এখন চিকিৎসক ও নার্স আছেন মাত্র এক জন করে। কর্মী কমলেও রোগীর চাপ দিন দিন বাড়ছে। কাজেই, পরিস্থিতি সামাল দেওয়া খুবই মুশকিল হয় বলে তাঁদের দাবি। এলাকার বাসিন্দা স্বরূপ মণ্ডল, শেখ রমজানেরা দাবি করেন, এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে আরও চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ করা দরকার। পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে যদি আরও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হয়, তাহলে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এলাকাবাসী বেশি উপকার পাবেন। আরও কর্মী আসার সঙ্গে ওই আবাসনগুলিও ফের ব্যবহার শুরু হলে সেগুলিরও হাল ফিরবে।
দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সী জানান, আপাতত উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে সীমানা পাঁচিল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার পরে আবাসনগুলি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হবে। আউশগ্রাম ২ বিডিও দীপ্তিময় দাস মেনে নেন, এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে কর্মী না থাকার জন্য আবাসনের এই অবস্থা। তাঁর আশ্বাস, “আমি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এই আবাসনগুলি কী ভাবে সংস্কার করে বাসযোগ্য করা যায়, তার ব্যবস্থা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy