Advertisement
E-Paper

সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা পেতে শয্যা চালুর দাবি

নানা মহলে বিস্তর দরবার করেও সরকারি উদ্যোগে মেটেলিতে কোনও পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালু না-হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার নেতা-কর্তারা সকলেই বিষয়টি জানেন। চা বলয়ের ওই এলাকায় যে একটি শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল দরকার সে কথা সকলেই স্বীকার করেন। কিন্তু, কাজের কাজ কেন হয় না সেই প্রশ্নে যে যাঁর মতো যুক্তি দিয়ে চলেছেন।

সব্যসাচী ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০৩:১১

নানা মহলে বিস্তর দরবার করেও সরকারি উদ্যোগে মেটেলিতে কোনও পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালু না-হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার নেতা-কর্তারা সকলেই বিষয়টি জানেন। চা বলয়ের ওই এলাকায় যে একটি শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল দরকার সে কথা সকলেই স্বীকার করেন। কিন্তু, কাজের কাজ কেন হয় না সেই প্রশ্নে যে যাঁর মতো যুক্তি দিয়ে চলেছেন।

অথচ মেটেলি বাজার ও লাগোয়া ৭টি চা বাগানে ৩০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা রয়েছেন। হাজার তিরিশেক বাসিন্দার জন্য এক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও সেখানে অন্তর্বিভাগ নেই। তাই শুধু দিনেই চিকিৎসা পরিষেবা মেলে ইনডং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে। রাতবিরেতে কিছু হলে রোগীকে নিয়ে ছুটতে হয় ১০ কিমি দূরের চালসায় মেটেলি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথবা ২০ কিমি দূরের মালবাজার ব্লক মহকুমা হাসপাতালে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইনডং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সর্বক্ষণের এক জন চিকিৎসক থাকলেও পরিকাঠামো না থাকায় জরুরি ভিত্তিতে পরিষেবা মেলে না। বহির্বিভাগে যেহেতু একজন চিকিৎসক, তাই তিনি ছুটিতে গেলে বা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে বিঘ্নিত হয় পরিষেবা। তখন ফার্মাসিস্টই ভরসা। এ ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা খুঁড়িয়ে চলছে ডুয়ার্সের ২০০ বছরের পুরানো জনপদ মেটেলিতে। বাসিন্দাদের রাতদুপুরে সমস্যা হলে গাড়ি ভাড়া করে ১০ কিমি দূরে মেটেলি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটতে হয়। নতুবা যেতে হয় ২০কিমি দূরের মালবাজার ব্লক মহকুমা হাসপাতালে। প্রসূতি এবং আশঙ্কাজনক রোগীদের ক্ষেত্রে এই দুর্ভোগ নরকযন্ত্রণারই সামিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত তিন দশকে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি দূরের কথা, আরও অবনতিই হয়েছে।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ব্রিটিশদের হাতে গড়ে ওঠা মেটেলি বাজারের চারপাশেই ইংরাজরা সাত-সাতটি চা বাগান পত্তন করে ছিলেন। ইংরেজ আমলে বাগান মালিকেরা হাসপাতাল তৈরি করান। সেই সব হাসপাতালে বড় বড় শহরের হাসপাতালের মতোই পরিষেবা মিলত। ৯০-এর দশকের গোড়ায় যেখানে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে এক্স রে পরিষেবা ছিল না সে সময়ে মেটেলির অনেক বাগানের হাসপাতালেই এক্সরে করানো হত। ধীরে ধীরে চা শিল্পে মন্দা আসায় হাসপাতালগুলিও কৌলিন্য হারিয়েছে। দুর্গতি বেড়েছে মেটেলির বাসিন্দাদের। স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তা পলাশ কুণ্ডু বলেছেন, “মেটেলির জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে এখানেও একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে প্রয়োজন। বহু বার নানা মহলে দাবি করেও কাজ হয়নি।” মেটেলি লাগোয়া জুরন্তি বাগানের বাসিন্দা নাগরাকাটা বিধায়ক জোসেফ মুন্ডা অবসর সময় কাটান মেটেলি বাজারেই। তিনি বললেন, “জন্মের পর থেকে ইনডং হাসপাতালের এই দশা দেখে যাচ্ছি। এখানে যাতে অন্তত ১০ শয্যার হাসপাতাল গড়া হয় তার জন্য বিধায়ক হওয়ার পর থেকে দফায় দফায় বিধানসভাতে আওয়াজ তুলেছি। লাভ কিছুই হয়নি।” মেটেলি পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি সফিরুদ্দিন আহমেদও হাসপাতালের কলেবর বৃদ্ধির দাবি যে ঠিক তা মেনে নিয়ে বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

sabyasachi ghosh meteli hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy