Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মোবাইল-ব্যাঙ্কে আধার চালু রাখতে বিল

এই সমস্যার সমাধানেই ঘুরপথে মোবাইলের সিম ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য আধার চালু রাখতে, আধার আইনে সংশোধনের জন্য বিল লোকসভায় পেশ করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে কোনও মোবাইল পরিষেবা সংস্থা আর সিম দেওয়ার জন্য আধার চাইতে পারছে না। ব্যাঙ্কগুলির পক্ষেও অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আধার বাধ্যতামূলক করা সম্ভব নয়। কারণ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, মোবাইলের সিম বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য আধার বাধ্যতামূলক করা যাবে না। এ দিকে দেশের ৬৮ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই সিম নিতে গিয়ে নানা মোবাইল পরিষেবা সংস্থার কাছে আধার জমা দিয়েছেন। ৬৫ কোটি মানুষ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের জন্যও আধার জমা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এত মানুষের আধার সংক্রান্ত তথ্যও মোবাইল সংস্থা বা ব্যাঙ্কের কাছে রাখা বেআইনি হয়ে গিয়েছে।

এই সমস্যার সমাধানেই ঘুরপথে মোবাইলের সিম ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য আধার চালু রাখতে, আধার আইনে সংশোধনের জন্য বিল লোকসভায় পেশ করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিল অনুযায়ী, স্বেচ্ছায় মোবাইলের সিম বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য আধারকে পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যাঁরা ইতিমধ্যেই সিম-ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য আধার জমা করেছেন তাঁরাও স্বেচ্ছায় জমা করেছেন বলে মোবাইল পরিষেবা সংস্থা বা ব্যাঙ্কগুলি দাবি করতে পারবে। গত বছরই এ বিষয়ে অধ্যাদেশ এসেছিল। সেই অধ্যাদেশকে পাকাপাকি আইনের চেহারা দিতেই বিল।

সরকার এই বিল পেশ করতেই বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে, ঘুরপথে সুপ্রিম কোর্টের রায় লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আম নাগরিকের ব্যক্তি পরিসরে যাতে আধার হস্তক্ষেপ না করে, তার জন্যই সুপ্রিম কোর্ট আধার বাধ্যতামূলক করা নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘দেশের স্বার্থেই আধার বিলে সংশোধন করা হচ্ছে। ব্যক্তি পরিসর লঙ্ঘন করা হচ্ছে না। আধারের কোনও বাধ্যতামূলক ব্যবহার নেই। আধার ছাড়া অন্য পরিচয়পত্র দিলেও সিম কার্ড মিলবে।’’ এ জন্য টেলিগ্রাফ আইন ও আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনেও সংশোধন করা হবে।

সরকারের যুক্তি হল, লক্ষ লক্ষ আধার সংক্রান্ত তথ্য মোবাইল পরিষেবা সংস্থা ও ব্যাঙ্কের কাছে জমা রয়েছে। নানা জায়গা থেকে সেই তথ্য একেবারে মুছে ফেলা কঠিন। আবার সরকারের পক্ষেও নিশ্চিত করা কঠিন যে সেই তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে। বিরোধীদের হয়ে আরএসপি নেতা এন কে প্রেমচন্দ্রন তিনটি বিষয়ে বিরোধিতা করেন। এক, এই বিল পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধী। দুই, এতে বেসরকারি সংস্থাকে আধার তথ্য রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। তিন, এতে ব্যক্তি পরিসরের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।

কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি, বর্তমান আইনে আধার আইন লঙ্ঘন হলে আধার কর্তৃপক্ষের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা নেই। সংশোধন করে আধারের বেআইনি ব্যবহারে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা, পরিচয় যাচাই করতে বেআইনি ভাবে আধার চাওয়ার জন্য ৩ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আধার তথ্য ভাণ্ডারে হাত দিলেও শাস্তির মেয়াদ ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। রবিশঙ্করের যুক্তি, ‘‘কোনও শিশুর আধার তৈরি হলে, সে চাইলে ১৮ বছর বয়সের পর আধার ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যেতে পারবে। আধার কর্তৃপক্ষের কাছে কারও তথ্য চাওয়া হলে ব্যক্তি পরিসরের অধিকার, নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের স্বার্থ ও আইন দেখে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Aadhaar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE