নরেন্দ্র মোদী
নোটবন্দি আর জিএসটি চালুর ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি ছোট ও মাঝারি শিল্প। ভোটের মুখে এসে তাদেরই জন্য ৫৯ মিনিটে ঋণের ব্যবস্থা করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। চলতি মাসের গোড়ায় এর ঘোষণা হতেই বেশ কিছু গরমিল ধরা পড়েছিল প্রকল্পটিতে। আজ এই প্রকল্পে বড় দুর্নীতির অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। তাদের দাবি, ৫৯ মিনিটে ঋণ আসলে ৫৬ ইঞ্চি ছাতির আর এক বড় দুর্নীতি। এই প্রকল্পে ছোট ও মাঝারি শিল্পকে ৫৯ মিনিটে ঋণ দিচ্ছেন যিনি, ২০১৪-র ভোটে তিনিই ছিলেন নরেন্দ্র মোদীর ভোট প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন।
এআইসিসি দফতরে কংগ্রেসের নেতা গৌরব বল্লভ প্রধানমন্ত্রীর চালু করা ওয়েবসাইট দেখিয়ে এ দিন অভিযোগ করেন, উপরে আগাগোড়া সরকারি মোড়ক দেওয়া হলেও আসলে ঋণ দেওয়ার মালিকানা একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে। ‘ক্যাপিটাওয়ার্ল্ড’ নামে এই বেসরকারি সংস্থার উপদেষ্টা বিনোদ মোধা, যিনি অনিল অম্বানীরও উপদেষ্টা। আর সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর অখিল হান্ডা। যিনি ২০১৪ সালে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন, মোদীর ভোট প্রচারের পুরো দায়িত্ব তাঁরই হাতে।
এখানেই শেষ নয়। এই ওয়েবসাইটে যে কোনও ছোট ও মাঝারি শিল্প নথিভুক্ত করতে হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, দশ লক্ষ শিল্প শুধু নথিভুক্ত করলেই একশো কোটি টাকা রোজগার বেসরকারি সংস্থাটির। ঋণ দেওয়া হোক বা না-হোক। তার উপরে রয়েছে প্রসেসিং ফি। আর এর মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও জিএসটির তথ্যও হাতে পেয়ে যাচ্ছে বেসরকারি সংস্থাটি। গৌরবের অভিযোগ, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বারবার বাজে ঋণ, সাইবার নিরাপত্তা আর ব্যাঙ্ক জালিয়াতি থেকে সতর্ক থাকতে বলেছে। আর এই তিনটিরই পরোয়া করা হয়নি এই ক্ষেত্রে। ২০১৫ সালে এই বেসরকারি সংস্থাটি তৈরি হয়। প্রথম দু’বছরে মাত্র ১৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছে তারা। সব নিয়ম ভেঙে এই সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের ফায়দা দেওয়ার লক্ষ্যে।’’
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই প্রকল্পটির গরমিল সামনে চলে আসায় নড়েচড়ে বসেছিল অর্থ মন্ত্রক। কেন্দ্রের ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (সিডবি)-কে দিয়ে দাবি করানো হয়, ‘ক্যাপিটাওয়ার্ল্ড’ সংস্থাটি সরকারি নিয়ম মেনে দরপত্র দিয়েই দায়িত্ব পেয়েছে। সরকারি ব্যাঙ্কের ৫৪ শতাংশ অংশিদারি আছে এটিতে। ৭ জনের মধ্যে ৪ জন ডিরেক্টরই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার প্রতিনিধি। ব্যবসায়ীদের কোনও তথ্য সাইটে জমাও রাখা হচ্ছে না। কংগ্রেস গোটা কাণ্ডে বড় আর্থিক দুর্নীতিরই গন্ধ পাচ্ছে। সে কারণে আজ তারা দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও অর্থ মন্ত্রকের বিরুদ্ধে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হোক। অবিলম্বে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হোক। রাফালের মতো এই ক্ষেত্রেও বেসরকারি সংস্থাকে মানুষের টাকা লুট করার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy