Advertisement
E-Paper

২০০ মৃতদেহ বয়ে করোনাতেই থামল আরিফের অ্যাম্বুল্যান্স

বহু রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনো তো বটেই প্রায় ২০০ করোনায় মৃতের দেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে গিয়েছেন আরিফ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ ১৫:০৪
মাঝখানে আরিফ খান। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

মাঝখানে আরিফ খান। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

আরিফ খান। অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তবে এটুকু পরিচয় আরিফের জন্য যথেষ্ট নয়। দীর্ঘদিন অ্যাম্বুল্যান্সের স্টিয়ারিং হাতে থাকলেও এই কোভিড কালে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক অন্যন্য যোদ্ধা। করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে পৌঁছনো থেকে কোভিডে মৃতের দেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া— সর্বত্রই তিনি সাড়া দেন একডাকে। একটি বারের জন্যও নিজের ঝুঁকির কথা ভাবেননি। কিন্তু রক্ষা পেলেন না। করোনাই কেড়ে নিল করোনা যোদ্ধার প্রাণ। শনিবার তাঁর দেহও দিল্লির হিন্দু রাও হাসপাতাল থেকে শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে গিয়েছেন অন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক।

দিল্লির শহিদ ভগৎ সিংহ সেবা দলের অ্যাম্বুল্যান্স চালাতেন ৪৮ বছরের আরিফ। এই বেসরকারি সংস্থা বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেয় রাজধানীতে। জানা গিয়ছে, বহু রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনো তো বটেই প্রায় ২০০ করোনায় মৃতের দেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে গিয়েছেন আরিফ। শুধু তাঁর সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নয়, ভয় ছিল নিজের পরিবার নিয়েও। তবে নিজেকে নিয়ে না ভাবলেও বাড়ির বাকিদের নিয়ে চিন্তা ছিল আরিফের। দিনের পর দিন তাই বাড়িই ফেরেননি। গত ৩ অক্টোবর নিজের করোনা সংক্রমণ হয়েছে জানার পরে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই শনিবার মৃত্যু হয়েছে।

প্রায় ছ’মাসের বেশি সময় অ্যাম্বুল্যান্সেই দিনরাত কেটেছে চার সন্তানের বাবা আরিফের। বাড়ি দিল্লির সিলামপুরে। সেখান থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে অ্যাম্বুল্যান্সের পার্কিং লট। সেখানেই থাকতেন। বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ফোনেই। ডিউটি ছিল ২৪ ঘণ্টার। যে কোনও মুহূর্তে ফোন এলেই যেতে হত কোনও রোগীর বাড়িতে কিংবা হাসপাতালে।

খুব বেশি বেতন ছিল না আরিফের। মাসে হাতে পেতেন ১৬ হাজার টাকা। সহকর্মীরা জানিয়েছেন, এর মধ্যে থেকেও মানুষের জন্য অনেক করেছেন আরিফ। কোভিডে মৃতদের অনেকের পরিবারই আসে না শেষকৃত্যের সময়ে। সেই সব ক্ষেত্রে নিজের টাকা দিয়েও দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেছেন। না, কখনও রোগীর পরিচয় দেখেননি। নিজে মুসলমান হলেও অনেক হিন্দুর সৎকারে নিজে উদ্যোগী হয়েছেন। জানিয়েছেন, শহিদ ভগৎ সিংহ সেবা দলের প্রতিষ্ঠাতা জিতন্দ্র সিংহ শান্টি।

আরও পড়ুন: মহিলার বাড়িতে মস্ত কাঁকড়া, উদ্ধারে এল পুলিশ

আরও পড়ুন: ধন্যি মেয়ে, ৮ বছরের কন্যের সাঁতার-সঙ্গী ১১ ফুটের পাইথন​

বাড়ি ভাড়া মাসে ৯ হাজার টাকা। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বাবার মৃত্যু হয়েছে। সে সব নিয়ে চিন্তা তো রয়েছেই সেই সঙ্গে আরিফের স্ত্রী-সন্তানদের আক্ষেপ, শেষ দেখাটা হল না। সেই মার্চ মাস থেকে বাড়ির বাইরে থাকা মানুষটা আর ফিরতে পারলেন না। কত দিন না দেখা মানুষটাকে অনেকটা দূর থেকে বিদায় জানাতে হল।

Ambulance Delhi Covid-19 Corona
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy