Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাঁধীদের তোপে মোদী-শাহ জুটি ও বিভেদের আইন || কংগ্রেসের পেটে ব্যথা: অমিত

সমাজে বিভেদ তৈরির রাজনীতি করার অভিযোগে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে মুখর হলেন সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০০
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের জুটি এবং আরএসএস সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে দেশে বিভাজনের রাজনীতি করছে বলে ভারত বাঁচাও জনসভায় সরব হল গাঁধী পরিবার।

সদ্য পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব আইনের স‌ংশোধনী। রাষ্ট্রপতির সইয়ের পরে তা আইনে পরিণত হতেই আগুন জ্বলছে অসম-সহ গোটা উত্তর-পূর্বে। রেশ এসে পড়েছে বাংলাতেও। এই পরিস্থিতিতে আজ সমাজে বিভেদ তৈরির রাজনীতি করার অভিযোগে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে মুখর হলেন সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। মোদী সরকারকে তুলোধোনা করলেন স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব ও অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য। ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে নির্বাচনী প্রচারসভা থেকে পাল্টা আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। বললেন, ‘‘ওই বিল পাশ হয়েছে বলে কংগ্রেসের এখন পেটে ব্যথা হচ্ছে।’’ অসমের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসের উস্কানিকেই দায়ী করেন শাহ।

এত দিন শুধু মোদীর সমালোচনা করে এলেও কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ পরিকল্পিত ভাবেই তাঁর সঙ্গে শাহকেও নিশানা করেছেন। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া মনে করেন, একা মোদী নন, শাহও এই সরকারের অন্যতম চালিকাশক্তি। এবং তাঁদের উপরে চাপ রয়েছে আরএসএসের। মোদী-শাহ জুটিকে আক্রমণ করার পাশাপাশি সনিয়া তাই বলেন, ‘‘সঙ্ঘ পরিবারের চাপে যে আইন সরকার এনেছে তা ভারতের আত্মাকে ছারখার করে দেবে। মোদী-শাহের তাতে পরোয়া নেই। দেশের সংবিধান ভেদাভেদের অনুমতি না-দিলেও, মোদী-শাহ জুটির সংকীর্ণ লক্ষ্যই হল, মানুষে-মানুষে লড়াই বাধানো। যাতে মূল সমস্যা চাপা পড়ে যায়। গোটা দেশের এখন প্রশ্ন, সবকা সাথ সবকা বিকাশ কোথায় গেল?’’

উত্তর-পূর্বের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে মোদী সরকার। সেখানকার অধিকাংশ রাজ্যে বিজেপির সরকার। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায় পরোক্ষে এসে পড়েছে কেন্দ্রেরই ঘাড়ে। শাসক শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে রাহুল আজ উত্তর-পূর্ব ও কাশ্মীরকে এক সূত্রে গেঁথে দেন। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীর থেকে উত্তর-পূর্ব, মোদী সরকার হাত যেখানে দিয়েছে, আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিভাজন ঘটিয়ে দেশকে দুর্বল করেছে। মোদীর ভাবনা একটাই, ক্ষমতা। ক্ষমতার জন্য তিনি সব কিছু করতে পারেন। তার জন্য এক ধর্মকে অন্য ধর্মের সঙ্গে লড়িয়ে দিতেও পিছপা হন না।’’

বিরোধীরা শুরু থেকেই বলছেন, দেশের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনকে অনুমোদন করে না। নাগরিকত্ব আইনের ওই সংশোধনী তাই সংবিধান-বিরোধী। প্রিয়ঙ্কা এ দিন বলেন, ‘‘মোদী-শাহের জন্য পবিত্র সংবিধানও ধ্বংসের মুখে। এর পরেও চুপ থাকলে দেখতে দেখতে অম্বেডকরের লেখা সংবিধানও শেষ হয়ে যাবে।’’

বিদেশনীতির ক্ষেত্রেও নয়া নাগরিকত্ব আইন কী ভাবে অস্বস্তিতে ফেলছে দেশকে, তা তুলে ধরেন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, এমনকি বাংলাদেশও প্রশ্ন করছে, ভারতে হচ্ছেটা কী! বাংলাদেশ ও জাপানের মন্ত্রীরা সফর বাতিল করছেন। এ সবের জন্য এক জনই দায়ী। তিনি হলেন নরেন্দ্র মোদী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Amit Shah BJP Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE