নেতার পাশে ‘নেডা’র বৈঠকের সূচনায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলছেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী কালিখোপুল। রয়েছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। বুধবার গুয়াহাটিতে। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেস বিরোধী জোট গড়ে বা বিকাশের বড় স্বপ্ন দেখিয়ে লাভ নেই। এলাকার উন্নতি না হলে মঞ্চ গড়ে ক্ষমতা দখলে রাখা যাবে না— নেডার মঞ্চে দাঁড়িয়ে এমনই মন্তব্য করলেন অসমে শাসক জোটের শরিক বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারি।
কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব গড়ার লক্ষ্য নিয়ে নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স বা নেডা তৈরি করেছে বিজেপি। আজ গুয়াহাটিতে নেডার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে ন'টি রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়ক, অসম, অরুণাচল, নাগাল্যান্ড ও সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী হাজির ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিজেপির রাষ্ট্রীয় সভাপতি অমিত শাহ।
নেডার আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আগেই মিজোরামের জোরাম ন্যাশনালিস্ট পার্টি ও মেঘালেয়র এইচএসপিডিপি মঞ্চ ও বিজেপির মিত্রতা থেকে সরে গিয়েছে। নেডায় যোগ দিলেও এনপিপি সাংসদ কনরাড সাংমা জানিয়েছেন, মেঘালয়ের বিধানসভা ভোটে প্রাক নির্বাচনী মিত্রতায় তাঁরা আগ্রহী নন। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি মতো বিকাশের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছিল জোট শরিক বিপিএফ। আজও, অকংগ্রেসি দলগুলির একজোট হওয়ার সমাবেশে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হুঙ্কারের মধ্যে তাল কেটে দিলেন হাগ্রামা। বক্তৃতায় স্পষ্ট জানালেন, বিজেপি যদি এলাকার ও জনগোষ্ঠীগুলির প্রতিশ্রুতি মাফিক উন্নতিসাধন না করে, উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধানে মন না দেয়, তবে, শুধুমাত্র উত্তর-পূর্বকে কংগ্রেস মুক্ত করার জন্য জোট বেঁধে লাভ নেই।
নেডার উদ্বোধন করে অমিত শাহ, উত্তর-পূর্ব উন্নয়নমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানান, উত্তর-পূর্বের উন্নয়নই হবে নেডার সাফল্যের হাতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বের জন্য কী কী প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তার খতিয়ান তুলে ধরেন তাঁরা। অরুণাচলের সাংসদ কিরেণ বলেন, ‘‘উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর দাবি, উত্তর-পূর্বের নিরাপত্তা ও বিকাশ নিয়ে কোনও অতীতে কোনও সরকার এত কাজ করেনি। অসম, মেঘালয়, মিজোরাম সীমান্তে পাকা বেড়া বসানোর কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হবে। উত্তর-পূর্বের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের দূরত্ব কমেছে। বাড়ছে মেলবন্ধন। যৌথ মঞ্চ গোটা উত্তর-পূর্বের সমস্যা একসঙ্গে তুলে ধরলে নীতি নির্ধারণে সুবিধে হবে।’’ তিনি উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে হিংসার ঘটনার নিন্দা করে বলেন, ‘‘সব রাজ্য এক মঞ্চে এলে দ্বেষের পরিবেশ কমবে। সমস্যা থাকলে আলোচনার মধ্যে মেটাতে হবে।’’
সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, ‘‘এই মহামঞ্চ আমাদের নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়াবে। অনুপ্রবেশ এতদঞ্চলের বড় সমস্যা। আমরা সকলে হাত মিলিয়ে কোনও বিদেশীকে এই ভূখণ্ডে থাকতে দেব না। এই অঞ্চলে কোনও জেহাদি শক্তিকে মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না। কংগ্রেসের আমলে উত্তর-পূর্বকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল। নেডা তাকে ফের জুড়বে।’’
অমিত শাহ বলেন, ‘‘নেডায় সব দলের সমান আসন থাকবে। জাতীয় দল হিসেবে বিজেপির নেতার আসন নেবে না।’’ তিনি জানান, উত্তর-পূর্বে এত সম্পদ, কিন্তু রাজ্যগুলি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে, কংগ্রেসের শাসনে ক্রমেই পিছিয়েছে। নেডার নেতৃত্বে ভারতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আসবে উত্তর-পূর্ব। এখানকার মানুষ মূল ভূখণ্ডে নিজেদের আর অসহায় বোধ করবেন না। ভারতের সীমান্ত সুরক্ষার জন্যেও নেডার রাজনৈতিক আন্দোলন কার্যকর হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গেও উত্তর-পূর্বের যোগ সুদৃঢ হবে। নেডার নেতৃত্বে আগামী এক দশকে ভারতের সামনের সারিতে উঠে আসবে উত্তর-পূর্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy