Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দুই যুবকের হত্যায় জাতিবিদ্বেষী প্রচার

সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বার শুরু হল উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা, জাতিবিদ্বেষী প্রচার। তোলা হচ্ছে কার্বি বিরোধী স্লোগান। গুয়াহাটি থেকে কার্বি খেদাও, বয়কট কার্বি আংলং— ডাক দিয়ে ফেসবুক পাতা, হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপও তৈরি হয়েছে।

দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল কার্বি আংলংয়ে। ছবি: পিটিআই।

দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল কার্বি আংলংয়ে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

ছেলেধরার গুজবটা ছড়িয়েছিল ইন্টারনেটে। তার জেরে কার্বি আংলংয়ের গ্রামে পিটিয়ে মারা হয়েছে দুই যুবক নীলোৎপল দাস ও অভিজিৎ নাথের। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বার শুরু হল উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা, জাতিবিদ্বেষী প্রচার। তোলা হচ্ছে কার্বি বিরোধী স্লোগান। গুয়াহাটি থেকে কার্বি খেদাও, বয়কট কার্বি আংলং— ডাক দিয়ে ফেসবুক পাতা, হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপও তৈরি হয়েছে। নিহত দু’জনের আজ দেহ গুয়াহাটিতে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে স্লোগান ওঠে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধেও। দোষীদের শাস্তির দাবিতে চাঁদমারির কমার্স পয়েন্টে আজ পথ অবরোধ হয়। প্রতিবাদ চলে রাতেও। রাজভবনমুখী মিছিলকে আটকালে শুরু হয় পাথর ছোড়া। পুলিশ লাঠি চালায়, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। অনেক মহিলা-সহ বেশ কিছু বিক্ষোভকারী জখম হন।

হত্যাস্থলের আশপাশ থেকে ১৬ জন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের ৯ জন বড়ো। ধৃতদের জনতার আদালতে তুলে দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন আজ থানা ঘেরাও করে। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, ভিডিয়ো থেকে চিহ্নিত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। নীলোৎপল ও অভিজিতের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ডকমকার পানিজুরি গ্রাম পুরুষহীন। গুয়াহাটিতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে কার্বিদের মধ্যে। আজ সকাল থেকে গুয়াহাটি ছেড়েছেন অনেক কার্বি ছাত্র ও চাকরিজীবী। নগাঁওয়ে কার্বি ছাত্রদের অবিলম্বে হোস্টেল খালি করতে বলা হয়েছে। ঘটনায় কয়েক জন বড়ো জড়িত থাকায় বড়োদের বিরুদ্ধেও জনরোষ তৈরি হচ্ছে।

কার্বি আংলং-সহ গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, মুখ্য সচিব টি ওয়াই দাস এবং ডিজিপি কুলধর শইকিয়া আজ বৈঠক করেন। রাজ্যবাসীকে গুজবে কান না দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানান তাঁরা। নীলোৎপল ও অভিজিতকে হত্যার ফুটেজ ছড়ানো রোখার চেষ্টা হচ্ছে। উড়ো খবর ছড়ানোয় দায়ে যোরহাটে ৪ জনকে ধরা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালাতে বিশেষ সেল তৈরি হয়েছে এডিজিপি হরমিত সিংহের নেতৃত্বে। তিনি জানান, অন্যান্য রাজ্যেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড শিলংয়ের সাম্প্রতিক অশান্তির পিছনে ‘বাইরের হাত’ থাকতে পারে বলে অভিযোগ এনেছেন। অসমেও তেমন শক্তি সক্রিয়া কি না তা দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE