শিলচরে গাঁধীবাগে ভাষা-শহিদ স্মরণ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
মাঠে বসে কেউ কবিতা লিখছেন। কেউ ছবি এঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন শহিদদের। গান-কবিতা-নৃত্যনাট্য তো রয়েছেই। রবিবার এমনই ছিল শিলচরের গাঁধীবাগের ছবিটা। এ দিন দুপুরে সেখানকার ভাষা শহিদ স্মৃতিসৌধের দরজা খোলার অনেক আগে থেকেই ফুল-মালা নিয়ে লাইনে দাঁড়ান অনেকে। বাগের ভেতরে অনুষ্ঠান ছিল বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের। গানের অনুষ্ঠান করে মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি। শিল্পীরা এ-মঞ্চ ও- মঞ্চ ঘুরেও গান গাইলেন। আর তিন মঞ্চকে আলপনায় জুড়ে দেন বিভিন্ন সংগঠনের জনা পঞ্চাশেক যুবা।
১৯৬১-র ১৯ মে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে শিলচরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন ১১ তরুণ-তরুণী। বরাকবাসী ফের প্রমাণ করলেন, সেই শহিদদের তাঁরা ভোলেননি। এ দিন ভোর ৬টায় স্টেশন চত্বর থেকে শুরু হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি পর্ব। সেখানকার ভাষা স্মারকে ফুল দিয়ে সকলে যান শিলচর শ্মশানঘাটে। রেল স্টেশনে গুলিতে নিহতদের অন্ত্যেষ্টি হয়েছিল এই শ্মশানেই। গাঁধীবাগের ভাষা শহিদ স্মৃতিসৌধের দরজা খোলে বেলা ২টা ৩৫ মিনিটে। ঠিক ওই সময়েই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়েছিলেন বীরেন্দ্র সূত্রধর, কমলা ভট্টাচার্য, কানাইলাল নিয়োগীর মতো ১১ জন।
বরাক উপত্যকার সর্বত্র এ দিন ভাষাশহিদ হিবস পালন হয়। রবিবার স্টেশন চত্বরে ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজ্যের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, সাংসদ সু্স্মিতা দেব, শিলচর পুরসভার সভাপতি নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে গাঁধীবাগে লাইনে দাঁড়ান স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল। ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে শিলচরে এসেছেন গুয়াহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনার শাহ মোহাম্মদ তনভির মনসুর। প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানেই ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে উঠে এসেছে এনআরসি নিয়ে উৎকণ্ঠা, হয়রানির কথা। মন্ত্রী পরিমলবাবু অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করেননি। তিনি জানান, রাজ্য বাজেটে এ বার বরাকে শহিদ স্মারক, জাদুঘর তৈরির জন্য অর্থের সংস্থান রাখা হয়েছে। শীঘ্র সে সব কাজে হাত দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy