আয়োজন: টাইলস বসাতে ঘরের মাটি কাটছেন কানু ও চম্পাদেবী।। খুঁটির উলিহাতুতে বিরসা মুন্ডার বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
ঝাড়খণ্ডের ‘ভগবানের’ ঘরে মাটি সরিয়ে বসছে দামি টাইলস।
এ সপ্তাহের শেষে তাতে বসে দুপুরের ভাত খাবেন অমিত শাহ। তখন যেন ধুলো না লাগে বিজেপি সভাপতির গায়ে— সে জন্যই বিরসা মুন্ডার বাড়িতে মাটি কাটার ব্যস্ততা! মঙ্গলবার খুঁটির উলিহাতু গ্রামে গিয়ে দেখা গেল এমনই দৃশ্য।
খুঁটির সদর শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের উলিহাতুতেই থাকতেন বিরসা। ঝাড়খণ্ডে বিজেপি সরকারের ১ হাজার দিন উদ্যাপনে রাজ্য সফরে আসছেন অমিত। ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি যাবেন উলিহাতুতে। গ্রাম ঘুরে দেখার পর যাবেন বিরসার বাড়িতে। সেখানে এখন থাকেন ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতির ছেলে কানু মুন্ডা। ভাঙাচোরা বাড়িতে তাই আলো, পাখা লেগেছে। মেঝেতে বসছে টাইলস। কাজে হাত লাগিয়েছেন কানু, তাঁর বোন চম্পাদেবী। এসডিও অফিসে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী কানু। চম্পা করেন দিনমজুরি। কোদাল চালানোর ফাঁকে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ভাঙা ঘরে কি টাইলস টিকবে? আমাকে একটা চাকরি দিলে বরং উপকার হতো।’’
আরও পড়ুন:পাহাড় মেটাতে হবে মমতাকেই
বিরসার আবাস শুধু নয়, বিজেপি নেতার জন্য সাজছে উলিহাতু। গত বছর অগস্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এসেছিলেন বিরসার গ্রামে। স্থানীয় রামসিংহ মুন্ডা বলেন, ‘‘তখন টানা দু’দিন বিদ্যুৎ ছিল গ্রামে। তার পর আবার যে কে সেই। এখন মাসে এক-দু’বার আলোর দেখা মেলে।’’ এ বার এখন থেকেই বিদ্যুৎ মিলছে প্রত্যন্ত ওই গ্রামে। আরও একটা লাভ হয়েছে। খুঁটি থেকে উলিহাতু পর্যন্ত তৈরি হয়েছে পিচের রাস্তা।
বেশিরভাগ সময় তালা প়ড়ে থাকত গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেটে। অমিতের সফরের আগে সেখানে বসেছে চিকিৎসা শিবির। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গ্রামে চলছে শৌচালয় তৈরির কাজও। একগাল হেসে গ্রামবাসী বুধুয়া মুন্ডা বললেন, ‘‘শৌচালয় তো হচ্ছে, কিন্তু জল কোথায়? পানীয় জল আনতে ২ কিলোমিটার হাঁটতে হয়। অত দূর থেকে শৌচের জল কে আনবে?’’ গাঁওবুড়ো রেজন মুন্ডার কথায়, ‘‘ওঁর সফরের এক সপ্তাহ পরে আসুন। দেখবেন আমরা ফের কয়েক হাজার দিনই পিছিয়ে পড়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy