৪০ সদস্যের গোয়া বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের লড়াইতে জিতল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের মৃত্যুর পর সোমবার গভীর রাতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির প্রমোদ সবন্ত।
গোয়ায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটে আছেন ২১ জন বিধায়ক। এর মধ্যে বিজেপির ১২ বিধায়ক ছাড়াও আছেন গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি (জিএফপি), মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির (এমজিপি) তিন জন করে বিধায়ক। এ ছাড়া তিন নির্দল বিধায়কের সমর্থনও বিজেপির পাশেই ছিল বলে জানা যাচ্ছে সংবাদসংস্থা সূত্রে।
বিজেপির পাশাপাশি বিরোধী কংগ্রেসের নিজেরই আছে ১৪ জন বিধায়ক। ৪০ সদস্যের গোয়া বিধানসভায় দুই বিধায়কের মৃত্যু এবং দুই কংগ্রেস বিধায়কের দলত্যাগ করার কারণে এখন বিধায়কের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬।
রবিবার বিজেপির জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের মৃত্যুর পর থেকেই গোয়ার দখল নিয়ে শুরু হয় চরম দ্বন্দ্ব। এত দিন নিজের ক্যারিশমা দিয়ে শরিক দলের বিধায়কদের বিজেপি জোটের মধ্যে রাখতে সফল হয়েছিলেন মনোহর পর্রীকর। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই নতুন দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হয়ে ওঠেন বিজেপি শরিক এবং নির্দল বিধায়কেরা। অন্য দিকে বিধানসভার বৃহত্তম দল হিসেবে সরকার গঠনের দাবি তোলে কংগ্রেসও।
আরও পড়ুন: টিকিট না মেলায় ‘বিদ্রোহ’ বিজেপিতে, উত্তর-পূর্বে দলত্যাগ ২৫ নেতা-মন্ত্রীর
পরিস্থিতি সামাল দিতে শরিক এবং নির্দল বিধায়কদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠকে বসে বিজেপি। মনোহর পর্রীকরের শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিধানসভার নেতা হিসেবে প্রমোদ সবন্তের নাম ঘোষণা করে বিজেপি। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাত দু’টোর সময় এগারো জন মন্ত্রীকে নিয়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। পাশাপাশি জোট অটুট রাখতে দুই উপমুখ্যমন্ত্রী রাখা হবে, এমনটাও জানিয়েছে বিজেপি। দুই উপমুখ্যমন্ত্রী হলেন জিএফপি-র বিজয় সরদেশাই, এমজিপি-র সুধীন দাভালিকার।
আজ গোয়া বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষার মুখোমুখি হন সদ্য শপথ নেওয়া মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের এই লড়াইতে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছিল না গোয়া বিজেপি। সেই কারণে সকাল থেকেই দলীয় বিধায়কদের পাঁচতারা হোটেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল অনেকটা কর্নাটক মডেল অনুসরণ করেই।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আপাতত শরিকদের দাবি দাওয়া মিটিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও, গোয়াতে বিজেপির রথ যে খুব একটা মসৃণ রাস্তায় চলবে না, সেই ইঙ্গিত মিলেছে সদ্যনির্বাচিত উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় সরদেশাইয়ের মন্তব্যেই। তাঁর বক্তব্য, “পর্রীকর এক জন আধুনিক মানুষ ছিলেন, উন্নয়ণের সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে সফল হয়েছিলেন তিনি। এটা একটা নতুন শুরু। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে, তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।”