কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
দেশের নানা প্রান্তে ছেলেধরা গুজব ঠেকাতে কী করা হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যগুলির কাছে তা জানতে চাইল কেন্দ্র। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরের জেরে হিংসা রুখতে রাজ্যগুলিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছে কেন্দ্র।
গত দু’মাসে বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরনের ভুয়ো খবরের জেরে গণপিটুনিতে প্রায় ২০ জনের মৃত্যুর পরেই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। গুজব ছড়ানো নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মতো সংস্থার জবাব তলব করেছে কেন্দ্র। হোয়াটসঅ্যাপের বক্তব্য জানার পরে এ বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে রাজ্যগুলি ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনকে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শিশু চুরির গুজবের দিকে নজর রেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করার কথাও বলা হয়েছে। শিশু চুরি ও অপহরণের আসল অভিযোগ নিয়ে যথাযথ তদন্ত করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, গুজব ছড়ানো এবং তার জেরে গণপিটুনির ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। জোর দেওয়া হচ্ছে সচেতনতা প্রসারেও। ছেলেধরা গুজবের জেরে পূর্ব মেদিনীপুর, মালদহ, বীরভূমের মতো জেলায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই গুজব ঠেকাতে সোশ্যাল মিডিয়াকেই ব্যবহার করছে প্রশাসন। বিভিন্ন জেলা পুলিশের ফেসবুক-টুইটারকে অ্যাকাউন্টকে সক্রিয় করে সেখানে কোনও রকম গুজবে কান না-দেওয়ার পাশাপাশি যাচাই না-করে কোনও তথ্য ছাড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। কেউ গুজবে ছড়ালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের তরফে পুরুলিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ সব জেলার গ্রামাঞ্চলে মাইকে আবেদন জানানো হচ্ছে, গুজবের ফাঁদে যেন কেউ পা না-দেন। ব্যানার, ফেস্টুনও টাঙানো হয়েছে। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘গুজব ঠেকাতে আমজনতার সাহায্য চাওয়া হয়েছে। নেট-দুনিয়াতে নজর রাখছি। এ কথা কেন্দ্রকে জানানো হবে।’’
গত মঙ্গলবার কেন্দ্র স্পষ্ট করে দিয়েছিল, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সংস্থা সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর দায় এড়াতে পারে না। তাদের প্রচার মাধ্যমের অপব্যবহার আটকাতে পদক্ষেপ করতে বলা হয়। এর পরেই কয়েকটি সিদ্ধান্ত সামনে এনেছে হোয়াটসঅ্যাপ। যেমন, ভুয়ো মেসেজ আটকানোর উপায় খুঁজতে সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছে পরামর্শ নেবে তারা। কেউ উপায় বাতলে দিলে ৫০ হাজার ডলার (প্রায় ৩৪ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা) দেওয়া হবে। তবে বুধবার হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে জানানো হয়েছিল, স্প্যাম আটকানো সম্ভব, কিন্তু ব্যক্তিগত মেসেজের গোপনতা রক্ষার জন্য এর বিষয়বস্তু দেখা হয় না। ফলে সেগুলি আটকানো সম্ভব নয়। অবশ্য ব্যবহারকারীদের রিপোর্টের ভিত্তিতে মেসেজ ব্লক করা যেতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ মনে করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy