Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কংগ্রেসের নিশানায় মোদী

নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মোদীকে চার দিক থেকে ঘিরে যে ভাবে এগোতে চাইছে কংগ্রেস, অন্য বিরোধী দলকেও সঙ্গে নিতে চাইছে, সেটি আঁচ করে আজ রাতেই আসরে নামল বিজেপি।

নরেন্দ্র মোদী। পিটিআই

নরেন্দ্র মোদী। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

নির্বাচনী বন্ডে কেলেঙ্কারির অভিযোগ গত কয়েক দিন ধরেই তুলে আসছে কংগ্রেস। এখন তো সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকাও খুঁজে পেয়েছে তারা। রাফালের পর বন্ডই এখন কংগ্রেসের হাতিয়ার। সংসদে আলোচনা, যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে তদন্তের দাবি তুলল তারা। সেই সঙ্গে এ ব্যাপারে দ্রুত রায়দানের আর্জিও তারা জানাতে চলেছে সুপ্রিম কোর্টে।

নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মোদীকে চার দিক থেকে ঘিরে যে ভাবে এগোতে চাইছে কংগ্রেস, অন্য বিরোধী দলকেও সঙ্গে নিতে চাইছে, সেটি আঁচ করে আজ রাতেই আসরে নামল বিজেপি। সাংবাদিকদের সামনে পাঠানো হল কেন্দ্রের মন্ত্রী ও বিজেপির অঘোষিত কোষাধ্যক্ষ পীযূষ গয়ালকে। প্রধানমন্ত্রীকে যথাসম্ভব আড়াল করে উল্টে বোঝাতে চাইল, কংগ্রেসই দুর্নীতিগ্রস্ত। সে কারণে রাফালের মতো এখানেও দুর্নীতি খুঁজছে। রাফালের মতো এ বারও একই ভাবে ব্যর্থ হবে।

আজ সকালেই সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে আহমেদ পটেল কংগ্রেস সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেন। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, নির্বাচনী বন্ড পুরোদস্তুর দুর্নীতি। ৬ হাজার কোটি টাকার ৯৫ শতাংশ অর্থ পেয়েছে বিজেপি। আর তথ্য জানার অধিকার আইনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, নির্বাচন কমিশন, অর্থ মন্ত্রকের আপত্তি সত্ত্বেও খোদ প্রধানমন্ত্রী নিয়ম ভেঙে এর মাধ্যমে দলের টাকা পাওয়ার পথ করে দিয়েছেন। এর বিনিময়ে শিল্পপতিদের কী বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে, সেটাই এখন তদন্তের বিষয়। সেই তদন্ত হতে পারে হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, নয়তো যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।

এই কৌশলের পরই আজ সংসদের দুই কক্ষে শোরগোল তোলে কংগ্রেস। লোকসভায় মণীশ তিওয়ারি প্রধানমন্ত্রীর নাম নিতেই স্পিকার ওম বিড়লা তাঁর মাইক ‘বন্ধ’ করিয়ে দেন। প্রতিবাদে সভাকক্ষ ত্যাগ করে কংগ্রেস। রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় বিরোধীদের হট্টগোল থামাতে হিমশিম খেতে হয় চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে। কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে রাজ্যসভার টেলিভিশন সম্প্রসারণও। আজই সংসদের অর্থ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ছিল। কিন্তু কোনও কারণ না দেখিয়ে বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয়।

সাংবাদিক বৈঠকে পীযূষ বলেন, ২০১৭-র ১ ফেব্রুয়ারি অরুণ জেটলি বন্ড আনার কথা ঘোষণা করেন। তার পর ৯-১০ মাস রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই এটি চালু হয়েছে। যাতে সৎ পথে সব টাকা আসে। তাঁর অভিযোগ, দশকের পর দশক ধরে দুর্নীতির কারণে কংগ্রেসের নেতারা ধনী হয়েছেন। সে কারণে তাঁরা সৎ পথে টাকা আসা রুখতে চাইছেন। এই বন্ডের মাধ্যমে যে কেউ নির্ভয়ে বিরোধীদেরও টাকা দিতে পারেন। কংগ্রেস জমানায় যেটি সম্ভব ছিল না, দাবি পীযূষের।

কিন্তু বন্ডের অধিকাংশ টাকা বিজেপিই পেল কেন? আর কেনই বা বিধানসভা ভোটের আগে বন্ডে টাকা নেওয়ার পথ সুগম করতে প্রধানমন্ত্রী দফতর হস্তক্ষেপ করল? পীযূষের জবাব, বিজেপি বিশ্বের সব চেয়ে বড় দল। তাই অনেকের ভরসা আছে। আর বছরে চার বার নির্দিষ্ট সময়ে এই বন্ডের জানালা খোলা হয়। বিধানসভা নির্বাচন সেই নির্দিষ্ট সময়ে পড়েনি বলেই আলাদা করে খোলা হয়েছিল। এটিও মোদী সরকারের পারদর্শিতা বজায় রাখার জন্যই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress BJP Electoral Bond Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE