ফের কংগ্রেসের নিশানায় নরেন্দ্র মোদী। ‘ব্র্যান্ড নমো’ এবং ‘গুজরাত মডেলকে’ ধাক্কা দিতে এ বারে খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই কাঠগড়ায় তুলল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদীর সিদ্ধান্তের জেরে গুজরাত রাজকোষের কুড়ি হাজার কোটি টাকা ক্ষতির তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি তুলল প্রধান বিরোধী দল।
আর এটা করার জন্য কংগ্রেস সেই পুরনো হাতিয়ারটিই ব্যবহার করল, যেটি ইউপিএ জমানায় মনমোহন সিংহ সরকারকে উৎখাতের জন্য বারবার ব্যবহার করেছে বিজেপি। সেটি হল কনট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) রিপোর্ট। সাম্প্রতিক ওই রিপোর্টে গুজরাত সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলা হয়েছে, কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের জন্য গুজরাত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ধার করে প্রায় কুড়ি হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুই হয়নি। ফলে জনগণের অর্থ পুরোটাই জলে গিয়েছে!
যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলছে, তার মধ্যে অসমই এক মাত্র জায়গা যেখানে কংগ্রেস ও বিজেপি দু’দলই ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে মুখোমুখি লড়াই করছে। কিন্তু গত কাল অসমে প্রথম দফার ভোটের পর খুব একটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে না বলে কংগ্রেস সূত্রেই খবর। এই অবস্থায় বিজেপির প্রধান মুখ নরেন্দ্র মোদীকেই নিশানা করার কৌশল নিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আজ রাজ্যসভার বিরোধী দলের উপনেতা আনন্দ শর্মাকে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করিয়ে সিএজি-র ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার
করে কংগ্রেস সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছে প্রধানমন্ত্রীকে।
বিজেপি অবশ্য বিষয়টিকে আমলই দিতে চাইছে না। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘সিএজি কোনও দুর্নীতির কথা বলেনি। শুধু মাত্র বলেছে, গ্যাস উৎপাদনের অনিশ্চয়তার কথা না ভেবেই বিনিয়োগ করা হয়েছে। যে কোনও বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা থাকে। এটিও তার মধ্যে একটি। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও নরেন্দ্র মোদীর কোনও নেতিবাচক ভূমিকা নেই।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস ভুলে যাচ্ছে, তাদের জমানায় টু-জি থেকে কয়লা ব্লক বণ্টন— একের পর এক দুর্নীতি সামনে এনেছিল সিএজি। ফলে দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে।’’
এ দিন আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘২০০৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, কে জি বেসিন থেকে ২০ লক্ষ কোটি কিউবিক ফিট গ্যাস পাওয়া যাবে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই গুজরাত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সেখানে বিনিয়োগ করে। অথচ দশ বছর হয়ে গেল এখনও পর্যন্ত কোনও বাণিজ্যিক উৎপাদন হয়নি। মোদীর গুজরাত মডেল ও ব্র্যান্ড নমোর ফানুস ফেটে গিয়েছে!’’ কংগ্রেস অবশ্য এ নিয়ে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেনি।
কিন্তু যে ভাবে মোদী গুজরাত উন্নয়নকে মডেল করে গোটা দেশ জুড়ে প্রচার চালিয়ে যান, এমনকী চলতি নির্বাচনেও রাজ্যে-রাজ্যে গিয়ে উন্নয়নের সেই মডেল দেখিয়েই ভোট চাইছেন, সেটাকে ধাক্কা দেওয়াই এখন মূল লক্ষ্য কংগ্রেসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy