লোকসভা নির্বাচনে এআইইউডিএফ দলের প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসের জয়ের পর কংগ্রেস দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্দেক আহমদ। এমনকী তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকেও অপসারণ করা হয়। এ বার সেই বিধায়ককেই কংগ্রেসের প্রতিবাদ যাত্রায় জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিল প্রদেশ কংগ্রেস।
সামনের বছরই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এখন থেকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার গড়ে তুলতে চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেসের অভিযোগ: বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার অসমে বিভিন্ন অনুদান প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ইন্দিরা আবাস যোজনা, এমনকী কৃষি উন্নয়নেও হ্রাস করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ। গুজরাত, মুম্বই থেকে যে ভাবে তেল উঠছে ঠিক সে ভাবেই অসম থেকেও তেল উঠছে। দু’টি রাজ্য প্রাকৃতিক তেল থেকে রাজস্ব লাভ করলেও অসমের ক্ষেত্রে বৈমাত্র-সুলভ আচরণ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ধরনের নানা অভিযোগ উত্থাপন করে কংগ্রেস মোদী সরকারেরর বিরুদ্ধে আগামী কাল, মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ দিবস পালন করবে। জেলা পর্যায়ে, রাজস্ব চক্রে এবং ব্লক পর্যায়ে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদে সামিল হতে বলেছে প্রদেশ কংগ্রেস। সেই প্রতিবাদ কার্যক্রমের পর্যবেক্ষক হিসেবে শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং মুজিবুর রহমানকে নিয়োগ করা হয়েছে। অনুরূপ ভাবে করিমগঞ্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিদ্দেক আহমদ ও পরিমল রায়কে। হাইলাকান্দি জেলা যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা গৌতম রায়ের নিজের এলাকা সেই কারণে সেখানে কোনও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেনি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আগামী নির্বাচনে কংগ্রেসের অবস্থা রাজ্যে আর আগের মতো মজবুত নয়। গত কয়েকটি ভোটে সংখ্যালঘু মানুষদের একটা বড় অংশ বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ-কে সমর্থন জানিয়ে আসছে। এনআরসি ইস্যুকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু মুসলমানরা এআইইউডিএফের পক্ষে থাকার সম্ভাবনা আরও প্রবল হয়ে উঠেছে। একই ভাবে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা হিন্দুদের যদি শরণার্থীর মর্যাদা দেয় বিজেপি সরকার, তাহলে বাঙালি হিন্দু ভোট বিজেপির পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় বরাকের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্তত গত নির্বাচনে কংগ্রেস যে পরিমাণ সংখ্যালঘু ভোট পেয়েছে তাও যদি ধরে রাখা যায়, সেই আশায় বরাকের একদা গগৈ-বিক্ষুব্ধ সিদ্দেককে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন কাজনীতির কুশীলবরা। উল্লেখ্য, অভিযোগ ছিল, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদ এআইইউডিএফ প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে সমর্থন করেছিলেন। রাধেশ্যাম বিশ্বাস করিমগঞ্জের সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগ লাভ করে জয়লাভ করেছিলেন লোকসভায়। রাধেশ্যামবাবুকে সমর্থন করার জন্য মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছিল সিদ্দেক আহমদকে। এখন সেই সিদ্দেক আহমেদকে দিয়েই সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসের পক্ষে টানতে চাইছে দল।
অন্য দিকে, প্রতিবাদ দিবসে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ায় সিদ্দেক আহমেদ তাঁর নির্দিষ্ট কর্মসূচি বাতিল করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার গুয়াহাটিতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তিনি যাচ্ছেন না। আগামী কাল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে করিমগঞ্জ কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy