ছররায় নিহত কিশোর জুনেদ আহমেদের দেহ নিয়ে মিছিল। শনিবার শ্রীনগরে রয়টার্সের ছবি।
নিরাপত্তাবাহিনীর ছোড়া ছররা গুলির আঘাতে কাশ্মীরে মৃত্যু হল ১২ বছরের এক কিশোরের। যার জেরে অশান্ত ভুস্বর্গে ফের জারি করা হল কার্ফু।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিহত কিশোর শ্রীনগরের সইদপুরার বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। তাদের রুখতে প্রথমে কাঁদনে গ্যাস ছোড়া হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ছররা বন্দুক চালায় বাহিনী। সেই সময়ই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লাগে বছর বারোর জুনেদ আহমেদের শরীরে। মাথায় ও বুকে, মুখে গুরুতর আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা জুনেদকে। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। ওই কিশোরের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়নি জুনেদ। সে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল।
এই ঘটনার পরই শনিবার সকাল থেকে উত্তাপ ছড়ায় শ্রীনগরে। জারি হয় কার্ফু। হাসপাতাল থেকে জুনেদের মৃতদেহ সইদপুরের বাড়িতে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় প্রবল বিক্ষোভ। জুনেদের শেষকৃত্যেও জড়ো হয়েছিল কয়েকশো মানুষ। সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে ওই কিশোরের দেহ ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা। তাদের রুখতে গেলে আবার এক প্রস্থ সংঘর্ষ হয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে। তাতেও জখম হয় বেশ কয়েক জন। বাধ্য হয়েই ফের জারি করা হয় কার্ফু।
জুনেদের হত্যার কড়া সমালোচনা করেছে জম্মু এবং কাশ্মীরের শাসক দল পিডিপি। দলের সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন ভাট বলেছেন, ‘‘কোনও বিক্ষোভে অংশ না নিলেও জুনেদকে কেন মারা হল তা জানতে দ্রুত তদন্ত করতে হবে।।’’ শাসক দলের দাবি, এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তারা কেউই রেহাই পাবে না। যদিও উত্তপ্ত উপত্যকায় সাধারণ মানুষের মৃত্যুর জন্য এ দিন সরকারকেই ফের কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্স।
জুলাইয়ে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছেন ৯০ জনের বেশি মানুষ। আহত ১০ হাজার। বন্ধ স্কুল, কলেজ। ৯২ দিন ধরে চলা কার্ফুতে ব্যাহত জনজীবন। ১২ বছরের কিশোরের মৃত্যু উপত্যকার অশান্তি আরও বাড়াল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy