Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মহারাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা দিবসে গড়চিরৌলিতে মাওবাদী হানায় নিহত ১৬

আজ মহারাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা দিবস। সে উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান চলছিল। তার মধ্যেই হামলা চালাল মাওবাদীরা।

টুকরো টুকরো: আইইডি বিস্ফোরণের পরে পুলিশের গাড়ির ছড়িয়ে পড়া অংশ। বুধবার মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে। ছবি: পিটিআই।

টুকরো টুকরো: আইইডি বিস্ফোরণের পরে পুলিশের গাড়ির ছড়িয়ে পড়া অংশ। বুধবার মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
গড়চিরৌলি শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৯ ০০:৪৬
Share: Save:

এক মাসের মধ্যে চার বার হামলা। মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে ফের মাওবাদীদের নিশানায় পুলিশ। লোকসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার পরে শুধু এপ্রিলেই এই নিয়ে ছত্তীসগঢ় সীমানায় গড়চিরৌলিতে ঘটে গেল চার-চারটি মাওবাদী হামলা।

পুলিশ জানিয়েছে, আজ দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ আইইডি বিস্ফোরণে উড়ে যায় গড়চিরৌলি পুলিশের একটি গাড়ি। চালক ছাড়াও তাতে ছিলেন সি-৬০ ‘কুইক রেসপন্স টিম’-এর ১৫ জন সদস্য। উত্তর গড়চিরৌলির কুরখেড়া-কোর্চি রোড দিয়ে যাওয়ার সময়ে জামভুমপদা গ্রামের কাছে বিস্ফোরণ ঘটে। আজ ভোররাতে সাড়ে তিনটে নাগাদ কুরখেড়ায় ১৩৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরির জায়গায় ঠিকাদারদের ২৭টি গাড়ি এবং যন্ত্রে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল মাওবাদীরা।

গাড়িগুলি পার্ক করা ছিল। পুলিশের দাবি, ডিজেল আর কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় মাওবাদীরা। সেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই টহলে বেরিয়েছিল ‘কুইক রেসপন্স টিম।’ বিস্ফোরণের পরে মাওবাদীদের সঙ্গে একপ্রস্ত গুলির লড়াইও হয়েছে পুলিশের। বিস্ফোরণের পরে গাড়ি থেকে উড়ে যাওয়া অংশ রাস্তায় ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আজ মহারাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা দিবস। সে উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান চলছিল। তার মধ্যেই হামলা চালাল মাওবাদীরা। গত বছর ২২ এপ্রিল নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখানেই নিহত হয় ৪০ জন মাওবাদী। সেই অভিযানে ছিলেন সি ৬০-এর কমান্ডোরাই। সে ঘটনার এক বছরে সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি চালাচ্ছে মাওবাদীরা। আজকের হামলা সেই প্রতিবাদেরই অংশ বলে মনে করছে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের ডিজিপি সুবোধ জায়সবাল বলেছেন, ‘‘ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করে এর জবাব দেব।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘মাওবাদীরা লোকসভা ভোটের সময়ে এ ধরনের হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল। আমাদের কাছে খবরও ছিল। বাহিনী টহল দিচ্ছিল। তার মধ্যেই কী ভাবে হামলা চালানো হল, আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’

মাওবাদীদের হাতে পুলিশকর্মীদের নিহত হওয়ার খবরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছেন, ‘‘ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা করছি। পুলিশকে স্যালুট। তাঁদের আত্মত্যাগ ভুলব না। স্বজনহারা পরিবারকে সমবেদনা। এ ধরনের হিংসার ষড়যন্ত্র যারা করে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না।’’ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইটারে বলেছেন, ‘‘গড়চিরৌলির ঘটনায় আমি মর্মাহত। শোকার্ত পরিবারগুলির প্রতি গভীর সমবেদনা।’’ মোদীকে বিঁধে তাঁর টুইট, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি। পুলওয়ামা... পঠানকোট... উরি... গড়চিরৌলি... এবং ২০১৪ সাল থেকে আরও ৯৪২টি বড় বিস্ফোরণ। প্রধানমন্ত্রীর উচিত কান খুলে শোনা।’’

মাওবাদী হামলা নিয়ে সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘নোট বাতিলের সময় বলেছিল সন্ত্রাস থামাবে। সন্ত্রাস তো ২০৭ গুণ বেড়ে গিয়েছে। এই তো মহারাষ্ট্রে মাওবাদী হামলা হয়েছে। আমরা জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। ঝাড়খণ্ড থেকে লোক পাঠিয়ে সেখানে অশান্তির চেষ্টা করছে। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। সেখানে দিল্লি থেকে উস্কানি দেওয়া হয়।’

১১ এপ্রিল, প্রথম দফার ভোটের দিন গড়চিরৌলিতে ভোটকেন্দ্রের কাছে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তাতে কেউ হতাহত হননি। তার আগের দিন এখানেই আইইডি বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন সিআরপি-র এক জওয়ান। এক মাস আগে ছত্তীসগঢ়ে বিজেপি নেতার কনভয়েও হামলা চালায় মাওবাদীরা। ৯ এপ্রিলের সেই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন চার নিরাপত্তা রক্ষী-সহ ওই বিজেপি বিধায়ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gadchiroli Maoist Attack Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE