পুরনো ভোটযন্ত্র নষ্ট করে নির্বাচন কমিশনের হাতে আসছে অত্যাধুনিক ইভিএম। গোটা দেশের ইভিএম-বিতর্কের মধ্যে আজ এ কথা জানাল খোদ কমিশনই।
কমিশনের মতে, ২০০৬ সালের আগে তৈরি ইভিএম নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেই সেটি শেষ বার ব্যবহার করা হয়েছিল। কমিশনের যুক্তি, ওই পুরনো যন্ত্রও হ্যাক করা সম্ভব ছিল না। ১৫ বছর পেরিয়ে যাওয়াতেই সেগুলি নষ্ট করা হয়েছে। ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নতুন যে ইভিএম আসছে, তাতে কারচুপির চেষ্টা হলে যন্ত্র তা শুধু বলেই দেবে না, নিজে থেকেই অকেজো হয়ে যাবে। যদিও এই নতুন যন্ত্রের সঙ্গে ২০০৬ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আনা ইভিএমও বহাল থাকবে, যাতে ভোট দিলে কাগজের স্লিপও বেরোয় অর্থাৎ ‘পেপার অডিট’ পাওয়া যায়।
উত্তরপ্রদেশের ভোটে অ-বিজেপি দলগুলির ভরাডুবির পরেই ইভিএমের কারচুপির অভিযোগ তোলেন মায়াবতী। বিরোধী শিবিরের দলগুলি এ নিয়ে তদন্তও দাবি করে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে একটি ইভিএম পরীক্ষার সময় সব ভোট বিজেপিতে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসায় বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। মুম্বই পুরসভার এক নির্দল প্রার্থীও ভোটের ফল প্রকাশের পরে নিজের খাতায় ‘শূন্য’ দেখে চমকে যান। বলেন, তাঁর নিজেকে দেওয়া নিজের ভোটটিও কী করে ইভিএমে এল না? দলের বৈঠকে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীও বলেন, মধ্যপ্রদেশের ঘটনাটি সামনে আসার পরে সন্দেহ বাড়ছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যে ভোট হয়েছে বিজেপি শুধু উত্তরপ্রদেশেই ইভিএমে কারচুপি করেছে।
আরও পড়ুন: গো-রক্ষার নামে তাণ্ডবের নিন্দা করলেন মোহন ভাগবতও
এই পাহাড়প্রমাণ অভিযোগের মুখে এর আগে দু’বার সাফাই দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ আরও এক দফা সাফাই দিয়ে কমিশন বলে, কোনও ভোটযন্ত্রেই কারচুপি করা সম্ভব নয় কোনও ভাবে। অনেক দেশে এই যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে, কারণ বাইরের যন্ত্রের মাধ্যমে সেগুলি চালিত হতো। ভারতের ইভিএম কোনও বাইরের যন্ত্র বা রিমোট দিয়ে চালানো যায় না। এই যন্ত্রের ‘মেশিন কোড’ তৈরি করেই বিদেশের চিপ লাগানোর জন্য দেওয়া হয়। যেহেতু ভারতে সেমি-কনডাক্টর মাইক্রোচিপ তৈরি হয় না।
কমিশনের আরও যু্ক্তি, যন্ত্র তৈরি যারা করে, তাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয় কোনটি কোথায় ব্যবহার হবে। আর প্রতি বার ব্যবহারের আগে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের দিয়ে যন্ত্র-পরীক্ষা করা হয়। খারাপ যন্ত্র বা তার চিপ নষ্ট করে ফেলা হয়। এ সবের মধ্যেই কমিশনের দাবি, নতুন যে যন্ত্র আসছে, সেটি এতটাই অত্যাধুনিক যে কারচুপির চেষ্টা হলে নিজে থেকেই বলে দেবে। আর সেটাই ভবিষ্যৎ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy