এক ঢিলে তিন পাখি।
এক, ভোটের আগে রামমন্দির নিয়ে হিন্দুত্বের হাওয়া উঠলে বিজেপিরই ফায়দা। দুই, রামমন্দির নিয়ে এ মাসের শেষে শুরু হওয়া শুনানির আগে ‘চাপ’ বাড়বে সুপ্রিম কোর্টের উপর। তিন, নরেন্দ্র মোদী সরকারও যদি হিন্দুদের আবেগ মেনে ভোটের আগেই আইন পাশ করে।
এই তিন লক্ষ্য মাথায় রেখেই আগামিকাল দিল্লিতে বসছে সাধুদের ‘উচ্চাধিকার কমিটি’-র বৈঠক। নৃত্যগোপাল দাসের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশ সাধুর এই বৈঠকের নেপথ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এখানেই স্থির হবে, ঠিক কোন পথে রামমন্দিরের আবেগকে ফের উস্কে দেওয়া যায়।
কিন্তু এখনই কেন?
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সূত্রের মতে, সুপ্রিম কোর্টের নতুন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন রঞ্জন গগৈ। অযোধ্যার জমি বিবাদ নিয়ে ২৯ অক্টোবর থেকে লাগাতার শুনানির কথা। সে শুনানি রোজ হলে ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তা হবে কি না, ক’জনের বেঞ্চ হবে, সুপ্রিম কোর্টে কত দিন সময় লাগবে, তা জানা নেই। অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের তিনটিই পথ। এক, আদালতের মাধ্যমে। দুই, মুসলিমদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে। তিন, সংসদে আইন বা অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক কার্যনির্বাহী সভাপতি অলোক কুমার বলেন, ‘‘আদালত এখনও পর্যন্ত আইনসম্মত কাজ করেনি।’’ অর্থাৎ, আদালতের পথ নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে তাঁদের। মুসলিমদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার সম্ভাবনাও নেই। আর মোহন ভাগবত নিজেই জানিয়েছেন, সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু সাধুদের নেই। অর্থাৎ, সরকার চাইলেই দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির পুরোটা হিন্দুদের দিয়ে দিতে পারে না।
এই পরিস্থিতিতে রামমন্দিরের আবেগ উস্কে দিতেই আগামিকালের বৈঠক। সাধু-সন্তরা ঠিক করবেন, কী পদ্ধতিতে ‘জনজাগরণ’ তৈরি করা হবে। পরিষদের নেতা সুরেন্দ্র জৈনের বক্তব্য, ‘‘সরকার বা আদালত, কারও সঙ্গে সংঘর্ষের পথে গিয়ে কোনও কৌশল রচনা হচ্ছে না।’’ তবে নেতারা মানছেন, মোদীকে সাহায্য করতেই কৌশল ঠিক হবে।
কিন্তু আগামিকাল যে পথই স্থির হোক, তাতে তো মেরুকরণের হাওয়াই উঠবে! তা নিয়ে বিরোধী দলেরও তো প্রবল আপত্তি রয়েছে। অলোক কুমারের বক্তব্য, ‘‘রাহুল গাঁধীও তো এখন পৈতেধারী হিন্দু। নিজেকে রামভক্ত বলেন। আর পশ্চিমবঙ্গে দিদিও তো দুর্গাপুজো প্যান্ডেলে টাকা দিচ্ছেন। রামমন্দিরে আপত্তি কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy