Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রায় না এসেও রেকর্ড জয়

ভোট প্রচার ছাড়া ৫ বছরে সাংসদ হিসেবে কেন্দ্রে প্রায় আসেননি। সারা দেশে প্রচারের জন্য ছুটে বেড়াতে গিয়ে এ বার এমনকি প্রচারের জন্যও বারাণসীতে সাকুল্যে কাটিয়েছেন এক রাত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৪:২২
Share: Save:

গত বার ভোট পেয়েছিলেন ৫ লক্ষ ৮১ হাজার। সেখানে এ বার জয়ের ব্যবধানই বেড়ে ঠেকেছে ৪ লক্ষ ৭৯ হাজারে। শেষমেশ ‘কথা রেখে’ নরেন্দ্র মোদীর মুখে রেকর্ড জয়ের মিষ্টি পান গুঁজে দিল বারাণসী।

ভোট প্রচার ছাড়া ৫ বছরে সাংসদ হিসেবে কেন্দ্রে প্রায় আসেননি। সারা দেশে প্রচারের জন্য ছুটে বেড়াতে গিয়ে এ বার এমনকি প্রচারের জন্যও বারাণসীতে সাকুল্যে কাটিয়েছেন এক রাত। ২৫ এপ্রিল ‘রোড শো’ আর ২৬ তারিখ মনোনয়ন পেশের শেষে জানিয়ে গিয়েছিলেন, হয়তো ভোটের আগে আর কেন্দ্রে আসতে পারবেন না তিনি। আসেননিও। কিন্তু তার পরেও জয় নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয় ছিল না। শুধু প্রশ্ন ছিল, জয়ের ব্যবধান কত হবে? দেশ জুড়ে মোদী-ঝড়ের দিনে তাতেও তাঁকে বিমুখ করেনি কেন্দ্র।

এ দিন জয়ের আনন্দে রাস্তায় লাড্ডু বিলিয়েছেন বিজেপি সমর্থকেরা। কেউ বিনা পয়সায় খাইয়েছেন মিষ্টি পান। কোথাও তুবড়ি পুড়েছে তো কোথাও ফেটেছে কালিপটকা। রোজা চলাকালীনও অনেকে যোগ দিয়েছেন এই ‘উৎসবে’। কোথাও শোনা গিয়েছে আক্ষেপ, ‘‘ইস্‌, জয়ের ব্যবধান সারা দেশে রেকর্ড হল না কেন!’’ আবার এই উন্মাদনা দেখে থম মেরে গিয়েছে বিশ্বনাথ মন্দিরের গা ঘেঁষা পাড়া।

প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘বিশ্বনাথ করিডর’ বানাতে গিয়ে ওই চত্ত্বরে বাড়ি, দোকান খুইয়েছেন অনেকে। ভোটের আগে রাগে ফুঁসছিলেন তাঁরা। বলছিলেন, এতে হারিয়ে যাবে কাশীর চিরন্তন গলি পরিচিতি। মাথার উপরে ছাদ আর জীবিকা হারাবেন অনেকে। মোদীর জয় নিশ্চিত জেনেও এঁরা প্রার্থনা করেছিলেন আশ্চর্য কিছু ঘটার জন্য। মনোজ শর্মা, জ্যোতিপ্রকাশ শর্মারা বলছেন, বাকি বাড়ি আর দোকানের বুলডোজারের নীচে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।

ভোটারদের একাংশের ক্ষোভ ছিল। প্রার্থী কেন্দ্রকে সময় দেননি। তবু এমন জয় কি ভোজবাজি?

স্থানীয়রা বলছেন, ‘না’। প্রথমত গত বার বিপক্ষে অরবিন্দ কেজরীবালের মতো হেভিওয়েট ছিলেন। সেখানে এ বার প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা বারাণসীতে দাঁড়াবেন না জেনে যাওয়ার পরে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের অজয় রাই আর এসপি-বিএসপি জোটের শালিনী যাদব। নিজের কেন্দ্রে নিশ্চিন্ত হয়ে তাই বাকি দেশ চষে বেড়াতে পারলেন মোদী।

আর দ্বিতীয়ত, মোদী না এলেও পাঁচ বছরে ভাল রাস্তা, বিদ্যুৎ পেয়েছে বারাণসী। বেড়েছে পরিচ্ছন্নতা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বাড়ি, সরকারি প্রকল্পে শৌচাগারও পেয়েছেন অনেকে। যাঁরা পাননি, তাঁরা বিশ্বাস করেছেন সুবিধা জুটবে আগামী পাঁচ বছরে। সঙ্গে ৫৬ ইঞ্চির ছাতি, বালাকোট আর হিন্দুত্বের জম্পেশ মিশেল। সব মিলিয়ে অপ্রতিরোধ্য দেখিয়েছে সাংসদ মোদীকে।

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাহুল গাঁধী যেখানে নিজের গড় অমেঠীতে ধরাশায়ী, সেখানে বারাণসীতে এই জয় হয়তো বাড়তি তৃপ্তি দিয়েছে মোদীকে। যে ভাবে প্রায় শূন্য সময় ব্যয় করে এই বিপুল জয় এসেছে, তা-ও তাঁকে সুবিধা দিয়েছে দেশ ঘুরে প্রচারে। দিনের শেষে তাই মোদীর টুইট, ‘‘মনোনয়ন পেশের সময়ে কাশীবাসী আশ্বস্ত করেছিলেন, আমাকে ছাড়াই প্রচার, ভোট সামলে নেবেন তাঁরা। সত্যি, সামলেই নিয়েছেন বটে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Results 2019 Narendra Modi Varanasi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE