—ফাইল চিত্র।
একাই তিনশো পার করে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদীর শপথও হয়নি। তার মধ্যেই আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত মোদীকে শুনিয়ে দিলেন ‘রাম’-এর কথা। রামের কাজের ভার ‘সঁপে দিয়ে’ও যে নজরদারি রাখছেন, জানিয়ে দিলেন সে কথাও।
রাজস্থানের উদয়পুরে আজ এক অনুষ্ঠানে ভাগবত বলেন, ‘‘রামের কাজ করতে হবে। আর সে কাজ হবেই। রামের কাজ তো নিজেদেরই কাজ। নিজেদের কাজ নিজেদেরই করতে হবে। কাউকে সঁপে দিলেও নজরদারি রাখতে হয়।’’ ভাগবত অবশ্য খোলসা করেননি, ‘রামের কাজ’ বলতে তিনি অযোধ্যায় রামমন্দিরের কথা বলেছেন না রাম-রাজ্যের। তবে যে ভাবে সে কাজ অন্যকে সঁপে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি, সেটি যে রামমন্দিরের প্রসঙ্গেই বলা তা নিয়ে বেশি সংশয় নেই গেরুয়া শিবিরে।
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। তিন সদস্যের কমিটি নিয়োগ করা হয়েছে মধ্যস্থতার জন্য। ১৫ অগস্টের মধ্যে সে রিপোর্ট জমা পড়বে শীর্ষ আদালতে। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগেই গেরুয়া শিবিরের একাংশের ক্ষোভ ছিল, গত বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও নরেন্দ্র মোদী সরকার রামমন্দির নির্মাণে কোনও পদক্ষেপ করেনি। এ বারে আরও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসার পরে শপথের আগেই ভাগবত কি মোদীকে মন্দিরের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন? সেই প্রশ্নই উঠছে বিজেপিতে। প্রশ্ন উঠছে, এ বারে মোদীর সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্কই বা কেমন হবে?
বিজেপির এক সূত্র বলছে, সম্পর্কে খুব বেশি বদল হবে না। অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় আরএসএসের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয়েছিল। সেই সময়ে আরএসএস প্রধান কে এস সুদর্শনের সঙ্গে নিত্যদিন বিবাদ লেগেই থাকত। কিন্তু গত পাঁচ বছরে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের সঙ্গে তেমন কোনও বড় বিবাদ তৈরি হয়নি। তার একটি বড় কারণ আরএসএসকেও যথেষ্ট পরিসর দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে-রাজ্যে এমনকি কেন্দ্রের সরকারেও বিভিন্ন নিয়োগ-বদলির ক্ষেত্রে আরএসএসের ভূমিকা আছে। যেটি মোদী-শাহের সম্মতি ছাড়া সম্ভব নয়। মোদীর আমলেই দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে মোহন ভাগবতেরা তিন দিনের সম্মেলন করেছেন। বিজেপি নেতাদের প্রশ্ন, অতীতে এমন সুযোগ আরএসএস কবে পেয়েছে? আর সে কারণেই ভোটের সময়ে রামমন্দির আন্দোলনে বিরতি রাখার ঘোষণা নিজে করেছেন ভাগবত। সেটি মোদী-শাহের অনুরোধেই। গোটা বিজেপি নেতৃত্বও মানেন, মোদীর এই জয়ের পিছনে সঙ্ঘের ভূমিকা অনেক। ভবিষ্যতেও জয়ের জন্য তাদের অবদান জরুরি।
তাহলে ‘রাম-কাজ’ নিয়ে ভাগবতের আজকের মন্তব্যের তাৎপর্য কী? বিজেপির এক নেতার মতে, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি ফিরে আসার পরে এটুকু প্রত্যাশা তো মোদী সরকারের
উপর রাখতেই পারে সঙ্ঘ। খোদ প্রধানমন্ত্রীও তো আজ বারাণসীতে বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে অযোধ্যার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অযোধ্যায় এত দিন দীপাবলির আয়োজন করতে কে বাধা দিয়েছিল?’’ যে ভাবে কাশী থেকে কেদারনাথে ধ্যানে বসছেন মোদী, সেটি তো বকলমে হিন্দুত্বের প্রচারের জন্যই। সে কারণে মোদীর জয়ে আরএসএসও সাধুবাদ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy