কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
হোয়াটসঅ্যাপকে ভারতে অফিস খুলতে বলল ভারত। হিংসা ছড়াতে বা প্রতিশোধ নিতে যে সব গুজব বা ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়, তা বন্ধ করতে সেগুলির উৎস জানানো বা অন্য কোনও সমাধান বার করার বিষয়ে তৎপর হতেও বলা হয়েছে সংস্থাটিকে।
হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান ক্রিস ড্যানিয়েলস পাঁচ দিনের সফরে ভারতে এসেছেন। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে আজ বৈঠক হয় তাঁর। বৈঠকের পরে রবিশঙ্কর জানান, খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের দৌলতে গোটা দেশে যে অসাধারণ প্রযুক্তিগত জাগরণ ঘটেছে, সে জন্য তাঁর প্রশংসা করেছেন। তবে এরই পাশাপাশি পিটিয়ে মেরে ফেলার মতো কাজে উস্কানি দেওয়া, প্রতিশোধ নিতে অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার মতো কিছু জঘন্য ঘটনাও ঘটছে। সে কথা উল্লেখ করে রবিশঙ্কর বলেছেন, ‘‘এগুলি স্পষ্ট ভাবেই অপরাধ ও ভারতীয় আইনের বিরোধী। হোয়াটসঅ্যাপকে অবশ্যই এ সব বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। নয়তো হোয়াটসঅ্যাপই এ সবে মদত জোগাচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হবে।’’
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে ড্যানিয়েলস অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে রবিশঙ্কর জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপ ভবিষ্যতে আর্থিক লেনদেনের কাজে নামলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়মকানুন মেনে চলবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আগামী কয়েক দিনে আরও কয়েক জন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে ড্যানিয়েলসের।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এ দিনের আলোচনায় উঠেছে। ফেসবুক পরিবারের এই সংস্থাটির কোনও অফিস ভারতে নেই। এ দেশের ২০ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী প্রতি দিন যত বার্তা, ছবি, ভিডিয়ো, অডিয়ো বা অন্য ফাইল এটির মাধ্যমে পাঠান, তা ঘোষিত ভাবেই চলে যায় আমেরিকা ও অন্য যে সব দেশে ফেসবুকের দফতর আছে সেখানকার সার্ভারে। শর্তেই বলা রয়েছে, যে কোনও মতবিরোধ বা অভিযোগের নিষ্পত্তি হবে আমেরিকায়, সে দেশের আইন মেনে। ভারতে পাওয়া তথ্য ভারতেই কোনও সার্ভারে রাখতে হবে— অতীতে এমন দাবি উঠেছিল। কিন্তু এতে সমস্যা হল, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশের সীমা মানতে হলে ভারতেও বিদেশের তথ্য নিয়ে কাজকর্ম শিকেয় উঠবে। এই ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাকে কোনও বাস্তবসম্মত সমাধান মনে করা যায় না। রবিশঙ্কর তাই আজ ড্যানিয়েলসকে ভারতে তাঁদের সংস্থার দফতর খুলতে ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আধিকারিক নিয়োগ করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: ভিডিয়ো বিতর্ক নিয়ে জবাব মোদীর দফতরের
গত কয়েক মাসে হোয়াটসঅ্যাপে গুজব ও ভুয়ো খবর ছড়ানোর জেরে মেঘালয়ের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দক্ষিণের কর্নাটক— অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন গণপিটুনিতে। মোবাইল অ্যাপটির বিপজ্জনক ভূমিকার বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা শুরু হয় দেশে। এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রবিশঙ্করের মন্ত্রক আগে দু’বার চিঠিও পাঠিয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপকে। তারই সূত্রে গত মাসে সংস্থাটির শীর্ষ স্তরের কয়েক জন কর্তা ভারতে এসে তথ্যপ্রযুক্তি সচিব ও অন্য অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে যান। আর আজ রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘বৈঠকে বলেছি, একই বার্তা যখন কয়েকশো বা কয়েক হাজার বার পাঠানো হচ্ছে, তার উৎস বার করাটা মোটেই রকেট সায়েন্স নয়। এর একটা সমাধানের ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে হোয়াটসঅ্যাপকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy