—ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের মুখে সারা দেশে রেলকে উন্নয়নের ‘মার্কশিট’ হিসেবে তুলে ধরতে চেষ্টার কসুর করেনি নরেন্দ্র মোদীর সরকার। রেলে স্বচ্ছতা এবং সুরক্ষার প্রশ্নে সরকারি ভূমিকার কথা বারবার প্রচারে আনা হয়েছে। কিন্তু সেই ‘মার্কশিট’ ঘাঁটতে গিয়ে সাফল্যের থেকে ব্যর্থতাই প্রকট হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের অনেকে। তাঁরা বলছেন, সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের রায়ে স্বচ্ছতার প্রশ্নে সরকারি দাবি ধাক্কা খাওয়ার পরে এ বার সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রেলের অভ্যন্তরীণ তথ্যে।
রেলে যাত্রী-সুরক্ষা নিয়ে সরকারি তৎপরতার কথা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক বার বলেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। দুর্ঘটনা কমাতে বিশেষ তহবিলের ব্যবস্থা করা ছাড়াও সারা দেশে ট্র্যাক বদলানোর কাজে জোর দেওয়ার কথাও বাজেটে জানান তিনি। কিন্তু রেললাইন বদলের কাজ চললেও লাইনে চিড় ও জোড়ের মুখে ফাটলের সংখ্যা দু’বছরে কমার চেয়ে বেড়েছে বলেই রেল সূত্রের খবর। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং সিগন্যাল বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ভূরি ভূরি।
রেলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরে জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে রেললাইনে চিড় অথবা ফাটল ধরার ৪৬৩৪টি ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ওই বিভ্রাটের সংখ্যা ছিল ৪৩৬৯। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে সেটা ছিল ৩৫৪৬। ফলে রেলকর্তাদের একাংশের মতে, রেললাইন এবং অনান্য যন্ত্রাংশে বিভ্রাটের পরিসংখ্যান যে-ভাবে সামনে এসেছে, তাতে যাত্রী-সুরক্ষা ব্যবস্থার কতটা উন্নতি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সদ্য সমাপ্ত আর্থিক বছরে অন্তত ৪৩ বার যাত্রিবাহী ট্রেন বেলাইন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রেলের বিভিন্ন জ়োনে প্রহরী-বিহীন লেভেল ক্রসিংয়ের তুলে দেওয়া নিয়ে রেলের সাফল্যের কথা প্রচার করা হলেও ওই ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বন্ধ হয়নি। দেশে অন্তত ছ’টি ক্ষেত্রে রক্ষিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। কাপলিং খুলে যাওয়ার সমস্যায় ট্রেন আলাদা হয়ে গিয়েছে ৬৪৩ বার। এর মধ্যে শুধু জানুয়ারিতেই সারা দেশে প্রায় ৬০ বার বিভিন্ন ট্রেনে কাপলিং খুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
দেশের ১৪টি স্টেশনে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ এবং জল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেখানে রেলের ভূমিকার সমালোচনাও করা হয়। স্বচ্ছতার পরে রেলের অভ্যন্তরীণ তথ্যে সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আধিকারিকদের অনেকেই ঢাকঢোল পিটিয়ে সরকারি প্রচারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy