ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক নাগরদোলায় এ বার একটি নতুন চমক। আজ পাকিস্তান বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামিকাল নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত আফগানিস্তানের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ‘হার্ট অব এশিয়া’ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে নয়াদিল্লি আসছেন পাকিস্তানের বিদেশসচিব আজিজ আহমেদ চৌধুরী। ওই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি।
এই পার্শ্ববৈঠকটিই কি সেই বহু ঘোষিত বিদেশসচিব স্তরের বৈঠক, যার জন্য এক বছর ধরে চলছে দ্বিপাক্ষিক টানাপড়েন? এখনই এ ব্যাপারে শেষ কথা বলতে চাইছেন না বিদেশমন্ত্রকের কর্তারা। কারণ দেশটির নাম পাকিস্তান, এবং সাম্প্রতিক অতীতে আগ বাড়িয়ে পদক্ষেপ করে বেশ কয়েক বার হাত পুড়েছে মোদী সরকারের। তাই বিদেশমন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘আগে বৈঠকটি হতে দিন। তার পরই না হয় বলা যাবে যে দ্বিপাক্ষিক সামগ্রিক আলোচনা শুরু হয়ে গেল কি না, নাকি এটা নিছকই প্রস্তুতি আলোচনা।’’ বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলি নিয়ে কথা হবে তা নিয়েও আগাম ভবিষ্যৎবাণী করতে চাইছে না সাউথ ব্লক।
তবে বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানানো হচ্ছে, আর যাই আলোচনা হোক বা না হোক পঠানকোট তদন্ত এবং ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার ইসলামাবাদ সফরের বিষয়গুলিকে টেবিলে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আগামিকাল রাখতে চলেছে ভারত। পঠানকোট হামলার পর বিশেষ তদন্তকারী দল নয়াদিল্লিতে পাঠিয়েছিল পাকিস্তান, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উদ্যোগে। এ দেশে এসে ভারতীয় গোয়েন্দাকর্তাদের দেওয়া সমস্ত তথ্য ও নথি সম্পর্কে মোটামুটি ভাবে সহমত পোষণ করেছিলেন পাক গোয়েন্দারা। কিন্তু স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পরই অন্য মূর্তি ধরে পাকিস্তান। প্রথমে জানানো হয় যে ওই ঘটনার চক্রী জইশ নেতা মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে কোনও প্রামাণ্য তথ্য তাদের কাছে নেই। পাশাপাশি নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আব্দুল বাসিত কড়া ভাষায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ভারত-পাক আলোচনা স্থগিত হয়ে গিয়েছে।
নয়াদিল্লির ধারণা, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সে দেশের সেনা তথা আইএসআই-এর সঙ্গে প্রবল স্নায়ুর লড়াই চলছে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের। তারই মধ্যে পানামার গোপন নথিতে নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় চাপ আরও বাড়ে নওয়াজের উপর। ভারতের সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে এখনও পর্যন্ত সক্রিয় নওয়াজ যে তাঁর ঘরোয়া রাজনীতিতে চাপ কাটিয়ে, ফের বিদেশসচিবকে নয়াদিল্লি পাঠাতে পারছেন, এটাকে শুভ সঙ্কেত বলেই মনে করছেন ভারতীয় নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy