বুধবার নরেন্দ্র মোদীর কাছে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। ছবি: পিটিআই
রবিবারে নবীন পট্টনায়ক। সোমবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারে নরেন্দ্র মোদী।
অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি ‘ফেডারেল ফ্রন্ট’-এর ডাক দেওয়া তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর) বুধবার দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন। দ্বিতীয়বার তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা রাওয়ের দফতরের দাবি, রাজ্যের উন্নয়নের দাবিদাওয়া নিয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন। দ্বিতীয়বার শপথ নেওয়ার পর মোদীর সঙ্গে এটাই তাঁর প্রথম বৈঠক। কেসিআর-কে ‘নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর এজেন্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করা কংগ্রেস নেতাদের অবশ্য প্রশ্ন, তিনি কি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফেডারেল ফ্রন্টের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট গিয়ে গেলেন! রাহুল গাঁধীর দলের নেতাদের দাবি, বিজেপি-বিরোধী জোটে ভাঙন ধরাতেই কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় জোট বা ফেডারেল ফ্রন্টের পরিকল্পনা।
তবে কংগ্রেসের চিন্তা বাড়িয়েছেন অখিলেশ যাদব। তিনি রাওয়ের এই ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে তিনি ও মায়াবতী কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই যে আসন ভাগাভাগির কথা ভাবছেন, তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন অখিলেশ। মধ্যপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক কমল নাথের সরকারকে সমর্থন জানালেও, তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ অখিলেশের মন্তব্য, ‘‘আমি কংগ্রেস পার্টিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যারা আমাদের বিধায়ককে মন্ত্রী করেননি। অন্তত ওঁরা সমাজবাদী পার্টির রাস্তা সাফ করে দিয়েছেন।’’ মায়াবতী ও অখিলেশের সঙ্গেও দেখা করতে চেয়েছেন কেসিআর। অখিলেশ জানিয়েছেন, তিনি নিজেই বৈঠক করতে হায়দরাবাদ যাবেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মহাজোটের চেষ্টা কয়েক মাস ধরেই চলছে। আমি তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি।’’ মায়াবতীর দিক থেকে অবশ্য এখনও সাড়া মেলেনি।
এ বারই প্রথম নয়। গত মার্চেও ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন নিয়ে তৎপর হয়েছিলেন কেসিআর। কিন্তু এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু বিজেপি-বিরোধী দলগুলির মহাজোট তৈরিতে সূত্রধরের ভূমিকা নিয়েছেন। কংগ্রেসকে নিয়েই জোটের কথা বলছেন চন্দ্রবাবু। পাঁচ রাজ্যের ভোটে বিজেপির ব্যর্থতা ও হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে কংগ্রেসের ক্ষমতা দখলের পর সেই মহাজোট নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে বিজেপিকে।
এই পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির জোট ভাঙতে মোদীই ফের কেসিআরকে মাঠে নামিয়েছেন বলে কংগ্রেসের দাবি। দলের নেতা আনন্দ শর্মার মন্তব্য, ‘‘ফেডারেল ফ্রন্টের উদ্যোগ আসলে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে এককাট্টা বিরোধীদের মধ্যে ভাঙন ধরানো। বিজেপি-কে সাহায্য করাই এর লক্ষ্য। কেসিআর হলেন মোদী-শাহর এজেন্ট।’’
কেসিআর যে ভাবে দিল্লি এসেই প্রধানমন্ত্রীর সময় পেয়ে গিয়েছেন, তা নিয়েও রাজনীতিকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, অতীতে পিনারাই বিজয়নের মতো অনেক বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীকেই প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েও অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কেসিআর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হাতে তিনদিনের সময় নিয়ে দিল্লি এসেছিলেন। প্রথমদিনেই তিনি সময় পেয়ে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy