ঘটনার এই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে টুইটারে।
ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি নিয়ে। তার জেরে কর্নাটকের একটি কলেজের অধ্যাপককে নিলডাউন করানো হল। হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ানো হল পড়ুয়াদের সামনে। আর এ সবটাই হল এক পুলিশ কনস্টেবলের চোখের সামনে। তা সত্ত্বেও থানায় অভিযোগ জমা পড়েনি। আর এসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর যে কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দেশ বিরোধী’ মন্তব্য করার দায়ে,ওই অধ্যাপককেই সাসপেন্ড করার চিন্তাভাবনা চলছে বলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকের বিজয়পুর জেলার ‘বচন পিতামহ ডাঃ পিজি হালাকাট্টি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজি’তে। সেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সন্দীপ বর্থার। পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে দু’টি পোস্ট করেন তিনি। দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য প্রথম পোস্টে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। সেই সঙ্গে শান্তির বার্তা দেওয়ায় ইমরান খানের প্রশংসা করেন। নিজের দ্বিতীয় পোস্টে ‘মোদীভক্তদের’ তুলোধনা করেন তিনি। লেখেন, ‘‘ইচ্ছাকৃতভাবে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছেন মোদীভক্তরা। যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাবটাকে জিইয়ে রাখছেন। মনে রাখবেন, যুদ্ধ নামলে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির জন্য দায়ী থাকবেন আপনারা। বিজেপি একেবারে নির্লজ্জ।’’
তাঁর পোস্ট দু’টি চোখে পড়তেই কলেজ চত্বরে বিক্ষোভে নামে এবিভিপি সদস্যরা। দেশবিরোধী মন্তব্যের জন্য তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে বলে দাবি তোলে। বিক্ষোভ থামাতে সন্দীপ বর্থারকে ক্ষমা চেয়ে নিতে নির্দেশ দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই মতো এবিভিপি কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাইতে যান তিনি। কিন্তু সেখানে নিলডাউন করতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। সেই অবস্থাতেই হাতজোড় করে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হয়। ফের কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের মন্তব্য করবেন না বলে প্রতিশ্রুতিও দিতে হয় গোটা কলেজের সামনে। এবিভিপি পড়ুয়াদের দাবি মেনে এখনও পর্যন্ত তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়নি যদিও, তবে মঙ্গলবার কলেজ খুললে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ ভিপি হুগ্গি। ঘটনার পর থেকেই নিজের মোবাইল ফোনটি বন্ধ রেখেছেন সন্দীপ বর্থার। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
আরও পড়ুন: মাসুদ আজহার মৃত? জল্পনা তুঙ্গে
আরও পড়ুন: বিমান হানার প্রমাণ চেয়ে পাকিস্তানের হাতকেই শক্ত করছে বিরোধীরা, ফের তোপ মোদীর
এর আগেও একাধিকবার এবিভিপি-র হাতে হেনস্থা হতে হয়েছে বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপকদের। দেশবিরোধী স্লোগান দিতে বাধা দিয়েছিলেন বলে গত বছর মধ্যপ্রদেশের একটি কলেজে অধ্যাপককে চরম হেনস্থা করা হয়। শেষ মেষ এবিভিপি কর্মীদের পা ছুঁয়ে প্রণামও করতে হয় তাঁকে।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy