Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
কাছা়ড় কাগজকল

অনটনে আত্মহত্যা করার চেষ্টা শ্রমিকের

আট মাস ধরে বেতন মেলেনি। সংসারে তীব্র অনটন। তার জেরে পাঁচগ্রামে কাছাড় কাগজকল চত্বরে গাছে দড়ির ফাঁসে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন অস্থায়ী এক শ্রমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৬
Share: Save:

আট মাস ধরে বেতন মেলেনি। সংসারে তীব্র অনটন। তার জেরে পাঁচগ্রামে কাছাড় কাগজকল চত্বরে গাছে দড়ির ফাঁসে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন অস্থায়ী এক শ্রমিক। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর নাম দিলওয়ার আহমেদ। আজ সকালের ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় শ্রমিক-মহলে। সহকর্মীরা দিলওয়ারকে দ্রুত দড়ির ফাঁস থেকে মুক্ত করে নামিয়ে নিয়ে আসেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসাকেন্দ্রে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।

বছরখানেক ধরে বন্ধ কাছাড় কাগজকল। মিলছে না বেতন। সঙ্কটে কয়েকশো অস্থায়ী শ্রমিক। সংসারের খরচ জোগাড়ে হিমসিম হচ্ছেন সকলে। এ দিন সকালে বকেয়া মেটানোর দাবিতে কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন শ্রমিকরা। দিলওয়ারও ছিলেন সেখানে। কিন্তু বেতনের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।

কাগজকলের কর্মীরা জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরই দিশাহারা হয়ে পড়েন দিলওয়ার। আচমকা উধাও হয়ে যান তিনি। কিছু ক্ষণ পর কাগজকলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি গাছে দড়ির ফাঁসে তাঁকে ঝুলতে দেখেন কয়েক জন শ্রমিক। হইচই শুরু হয়। দ্রুত কয়েক জন গাছে উঠে দড়ির ফাঁস থেকে দিলওয়ারকে মুক্ত করে নীচে নামিয়ে নিয়ে আসেন। বেহুঁশ হয়ে গিয়েছিলেন ওই শ্রমিক। প্রাথমিক চিকিৎসরা পর কিছুটা সুস্থ হন।

ওই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ কর্মীরা কাগজকলের প্রশাসনিক কার্যালয় ঘেরাও করেন। আটকে পড়েন সেখানকার আধিকারিকরা। জরুরি বৈঠকে বসেন তাঁরা। তাতে সামিল হন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। দিলওয়ার পরে বলেন, ‘‘৮ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। বাড়ির সবাই কয়েক দিন ধরে খেতে পাচ্ছে না। টাকা কবে পাব তা জানি না। আত্মহত্যা ছাড়া উপায় খুঁজে পাইনি।’’

আইএনটিইউসি নেতা মানবেন্দ্র চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই শ্রমিকদের বকেয়ার কিছু টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কাগজকল কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘কারখানার ইতিহাসে খিদের জ্বালায় কর্মীর আত্মহত্যার চেষ্টার নজির নেই।’’ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। মানবেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে অন্যায় করছে।’’ তাঁর বক্তব্য, কাছাড় কাগজকলের পরিবহণ ভর্তুকি হিসেবে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৪৯ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা কোথায়, কী ভাবে খরচ করা হয়েছে তা জানা যাচ্ছে না। পাঁচগ্রাম কাগজকলের শীর্ষ আধিকারিক অরিন্দম রায় জানান, শ্রমিকদের বেতন মিটিয়ে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cachar Paper Mill Suicide Hailakandi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE