জগদীশচন্দ্র বসুর নামে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল।
বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের লম্বা তালিকা। আর তাতেই জ্বলজ্বল করছে একটি নাম— ‘জে সি বোস’! জমা না পড়া টাকার পরিমাণ, ১ লক্ষ ১ হাজার ৮১৬ টাকা ১২ পয়সা!
সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে ঝাড়খণ্ডের ‘বিজলি বিতরণ নিগম লিমিটেড’-এর ওয়েবসাইটে। স্বাভাবিক ভাবেই, এ খবর প্রকাশ্যে আসতে হইচই পড়ে গিয়েছে। যার নামে বিদ্যুৎ বিল জমা দেওয়ার এই অভিযোগ, সেই ‘জে সি বোস’ তো আর কেউ নন, বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু!
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কেউ কেউ জিভ কাটছেন। কেউ আবার বলছেন, ‘ছি ছি ভুল হয়ে গিয়েছে, আমরা যারপরনাই লজ্জিত’! ওয়েবসাইটে ছেপে বেরিয়ে যাওয়া তথ্য তড়িঘড়ি মুছে ফেলার জন্য তৎপর হয়েছে সংস্থাও। কিন্তু এমনটা হল কী ভাবে?
আসলে গিরিডিতে একটি বাড়ি ছিল জগদীশচন্দ্রের। প্রায় আট দশক আগে তাঁর মৃত্যুর পর বাড়িটি সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন বিহার সরকার। কিন্তু এর পর জল গড়িয়েছে বহু দূর। রাজ্য ভাগ হয়েছে। বিহার ভেঙে তৈরি হয়েছে ঝাড়খণ্ড। নতুন সরকার গঠনের পর ওই বাড়িতে সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে ‘স্মারক জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্র’ তৈরি করে প্রশাসন। এর পরই শুরু হয় সমস্যা। বিজ্ঞান কেন্দ্র তৈরি হয়ে যায় বটে, কিন্তু মাসের পর মাস বিল বকেয়া রেখে দেয় সরকার। এক সময় বিল না দেওয়ায় বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় নিগম। বাড়ির দীর্ঘদিনের কেয়ারটেকার বিনোদ মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেক বার বকেয়া মেটানোর জন্য বিদ্যুৎ পর্ষদ থেকে চিঠি এসেছিল। কিন্তু সর্বশিক্ষা মিশন কর্তৃপক্ষ তা না দেওয়ায়, ২০০৩-এ বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়।’’
তবে কি বকেয়া বিলের দায় এখন জগদীশচন্দ্রের? ভুল মেনেছেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁরা জানান, কোনও ভাবে ওয়েবসাইটে ওই বাড়ির এককালের বাসিন্দা জগদীশচন্দ্র বসুর নাম ‘আপলোড’ হয়ে গিয়েছে। কারণ, এক সময় তাঁর নামেই বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। কিন্তু দ্রুত সেই ভুল শুধরে নেওয়া হবে।
গিরিডি জেলা প্রশাসন বকেয়া বিলের দায় চাপিয়েছে সর্বশিক্ষা মিশনের উপরে। জেলার তথ্য অফিসার শিবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই বাড়ির দায়িত্ব সর্বশিক্ষা মিশনের। আমরা অনেকবার বিল মেটানোর কথা ওঁদের বলেছি। ফের ওঁদের তলব করা হবে।’’
সর্বশিক্ষা মিশনের ডিসট্রিক্ট সুপারিন্টেনডেন্ট অব এডুকেশন মাহমুদ আলম বলেন, ‘‘ওই টাকার মধ্যে পুরনো বকেয়া রয়েছে। ঝাড়খণ্ড তৈরি হওয়ার আগেও কিছু বিল বকেয়া ছিল। তার দায় মোটেই আমাদের
নয়। তবে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy