ছবি: এএফপি।
বড় ছেলের বিয়েতে যোগ দিতে পাঁচ দিনের প্যারোলে পটনায় আসছেন লালুপ্রসাদ।
পশুখাদ্য মামলায় দোষী সাব্যস্ত লালু গত সোমবার ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে পাঁচ দিনের প্যারোলের আবেদন করেছিলেন। আজ, বুধবার সকালে সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। শারীরিক ভাবে অসুস্থ লালু এই মুহূর্তে রাঁচীর রাজেন্দ্র ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিমস)-এ ভর্তি রয়েছেন। সেখান থেকেই এ দিন বিকেলে পটনার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে এ দিন আদালতের সেই নির্দেশের কাগজপত্র না পাওয়ায় আজ, বুধবার পটনায় আসা হচ্ছে না লালুর। আগামিকাল বিকেলে তিনি পটনায় পৌঁছতে পারেন তিনি।
আগামী ১২ মে লালুর বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদবের বিয়ে। পাত্রী, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দারোগা রায়ের নাতনি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রিকা রায়ের মেয়ে ঐশ্বর্যা রায়। পটনায় লালু-পত্নী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবীর সরকারি বাসভবনে বিয়ের অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই পটনা আসতে চান লালু। রিমস থেকেই সরাসরি সেখানে পৌঁছবেন লালু। দলীয় বিধায়ক ভোলা যাদব বলেন, “১০ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত, পাঁচ দিনের প্যারোলের আবেদন করেছিলাম আমরা। ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেয়েছিলেন লালুজি। সে জন্যই ওই আবেদন করা হয়েছিল। এ দিন মঞ্জুর হয়েছে।”
আরও পড়ুন
বৃহত্তম দল হলে প্রধানমন্ত্রী হব, গণিত রাহুলের
তেজপ্রতাপ এবং ঐশ্বর্যার বিয়ের জন্য ইতিমধ্যেই পটনায় চন্দ্রিকা রায়ের স্ট্র্যান্ড রোডের বাংলোর অনুষ্ঠানেও সাজ সাজ রব। ওই অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও হাজির থাকবেন দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী-সহ বিরোধী দলের সদস্যেরাও। এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন লালুও। স্বাভাবিক ভাবেই এই সময়ে লালুর প্যারোলে মুক্তির গুরুত্বও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কারণ, বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে ‘একত্রিত’ হচ্ছেন বিজেপি-বিরোধীরা। ফলে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এই জমায়েতের গুরুত্বও অপরিসীম।
আরও পড়ুন
মাওবাদী নেতাদের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেলেন গোয়েন্দারা
পাত্রীর বাড়ির মতোই পটনায় রাবড়ি দেবীর সরকারি বাসভবন ১০ সার্কুলার রোডে অনুষ্ঠানে জাঁকজমকের অন্ত নেই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে লালুর প্যারোলে মুক্তির খবর। ফলে সেখানে যেন বইছে দ্বিগুণ খুশির হাওয়া। জেলযাত্রার পর রাবড়ি দেবীর সঙ্গে সরাসরি দেখা হয়নি লালুর। স্বাভাবিক ভাবেই স্বামীর অপেক্ষায় রয়েছেন রাবড়ি দেবী। তেজপ্রতাপের বিয়ে উপলক্ষে ইতিমধ্যেই সেখানে হাজির লালুর মেয়ে-জামাই-আত্মীয়স্বজনেরা। প্রতি দিনই সেখানে কিছু না কিছু অনুষ্ঠান লেগেই রয়েছে। তবে লালু না থাকায় তা যেন কার্যত রংহীন হয়ে ছিল। এ দিন তাঁর প্যারোলে বাড়ি আসার খবরে সেখানকার অনুষ্ঠান যেন আরও রঙিন। দুপুর থেকেই লালুর বাসভবনের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন আরজেডি কর্মী-সমর্থকেরা। হাজির হচ্ছেন দলীয় নেতা-নেত্রীরাও। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য তৎপর হয়েছে পটনা পুলিশ। তবে এই গোটা পর্ব ঘিরে কোনও রকম বি়বৃতি দেয়নি লালু-পরিবার।
গত ডিসেম্বরের শেষে পশুখাদ্য মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জেল হয় বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরডেজি সুপ্রিমো লালুর। তবে প্রথমে রাঁচীর জেলে গেলেও অসুস্থ বোধ করায় সেখান থেকে তাঁকে রিমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরে সেখান থেকে দিল্লির এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর ফের এইমস থেকে লালুকে রিমস-এ ভর্তি করানো হয়। যদিও লালুর পারিবারিক চিকিৎসকের দাবি, শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়া সত্ত্বেও রিমস-এ পাঠানো হয়েছিল লালুকে। এ নিয়ে লালুর পরিবারেরও ক্ষুব্ধ। তবে বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে সেই সমস্ত ক্ষোভ ভুলে এখন আনন্দে মাতোয়ারা গোটা লালু পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy