সব দলই ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রাম-ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার নানা মঞ্চে প্রচারের নকশা তৈরিতে ব্যস্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কান পেতে’ সেখানকার আলোচনা শোনা অর্থাৎ ‘সোশ্যাল লিসনিং’। সেই আলোচনার মধ্যে থাকা আবেগকে জরিপ করে তাকে বিশ্লেষণ করা বা ‘সেন্টিমেন্ট অ্যানালিসিস’। বিপণন বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মূলত এই দুই কৌশল অণুসরণ করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোট-প্রচারের কৌশল তৈরি করছে রাজনৈতিক দলগুলি।
মাঠ-ময়দান তো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়াও এখন ভোট-প্রচারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ঝড় তুলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ফলও মিলেছিল হাতেনাতে। এ বারের ভোটেও কোনও দলই কাউকে জমি ছাড়তে রাজি নয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাই সব দলই ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রাম-ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার নানা মঞ্চে প্রচারের নকশা তৈরিতে ব্যস্ত।
বিজেপির ডিজিটাল প্রচারের কাজ করা মুম্বইয়ের একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্ণধার বলছেন, ‘‘সফটওয়্যারের মাধ্যমে সোশ্যাল লিসনিং চালায় বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো। সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের মাধ্যমে বোঝা যায় কী কী নিয়ে মানুষ কথা বলছেন। সেই বিষয়গুলিকে ভিত্তি করেই প্রচারের কনটেন্ট তৈরি হয়।’’ তিনি জানাচ্ছেন, এ বারের ভোটের আগে যে সব বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা হচ্ছে তার মধ্যে চাকরি, কর্মসংস্থান অন্যতম। তাই সব দলের প্রচারেই তা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কেবল রাজনৈতিক প্রচারই নয়, কোনও বাণিজ্যিক পণ্য বিপণনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি নেওয়া হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ সুপর্ণ মৈত্রের কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে রাজনীতির বার্তাও যেন পণ্য। দলগুলি সেই বার্তাকে যথাযথ রূপ দিয়ে, উপযুক্ত উপভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে চায়।’’
কে আমার কথা শোনার উপযুক্ত, তা চিহ্নিত করাও ডিজিটাল দুনিয়ায় সহজ হয়ে গিয়েছে অনেক। বিজ্ঞাপন-স্রষ্টা শৌভিক মিশ্র বলছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কী পছন্দ করছেন, কোথা থেকে করছেন, কখন করছেন, মোবাইল থেকে করছেন না কম্পিউটার থেকে করছেন, তাঁর বয়স কত— এমন নানা তথ্য খুব বিশদে পাওয়া যায়। তাই আলাদা আলাদা জনগণের জন্য আলাদা আলাদা প্রচার-কৌশল তৈরি করাও সম্ভব হয়।’’
কোন মানুষ কী পছন্দ করছেন, সেই তথ্য থেকেই বোঝার চেষ্টা করা হয় তাঁর আবেগকে। সেই আবেগকে বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াই বিপণনের পরিভাষায় ‘সেন্টিমেন্ট অ্যানালিসিস’। সেই বিশ্লেষণ অনুযায়ী এমন প্রচারের ছক তৈরি করা হয় যাতে তা সবচেয়ে বেশি মানুষের আবেগকে ছুঁতে পারে।
শৌভিক জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতি বিপণনের একটা পুরনো কৌশল। কেবল ডিজিটাল নয়, অন্য নানা মাধ্যমেও জনগণের আবেগকে বুঝে সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপন তৈরির এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। শৌভিকের কথায়, ‘‘সে জন্যই যে সমস্ত বিষয়ে সঙ্গে অসংখ্য মানুষের আবেগ জড়িত তা নিয়ে প্রচুর বিজ্ঞাপন হয়। যেমন দুর্গাপুজো। রাজনৈতিক প্রচারের ক্ষেত্রেও একই ভাবে তা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy