Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের আকাশে এগিয়ে বিজেপিই, দাবি রিপোর্টে

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক উড়ান কর্তাদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিজেপি আগেই ব্যক্তিগত বিমান-কপ্টারের বেশিরভাগই ভাড়া করে ফেলেছে।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০১
Share: Save:

ভোট চলছে। দেশজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শাসক-বিরোধী নেতানেত্রীরা। ফলে চাহিদা বেড়েছে চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টারের। একটি সং‌বাদমাধ্যমের দাবি, বেশিরভাগ বিমান-কপ্টার কুক্ষিগত করে ফেলার অভিযোগও উঠেছে শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে।

৬ এপ্রিল দিল্লি থেকে বিজয়ওয়াড়া গিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তার পরে যান অসমের ডিব্রুগড়ে। এর পরের গন্তব্য ছিল নিজের শহর আমদাবাদ। গোটা দিনে প্রায় সাড়ে চার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। রাজনীতিকদের মতে, বিমান-কপ্টার ছাড়া দেশের সব প্রান্তে মানুষের কাছে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক উড়ান কর্তাদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিজেপি আগেই ব্যক্তিগত বিমান-কপ্টারের বেশিরভাগই ভাড়া করে ফেলেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে কংগ্রেস। উড়ান কর্তারা জানাচ্ছেন, ২০টি বিমান ও ৩০টি কপ্টার ভাড়া করেছে বিজেপি। কংগ্রেসের হাতে মোটে গোটা দশেক।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

চার্টার্ড উড়ান ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘বিজনেস এয়ারক্রাফট অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর উপদেষ্টার কাজ করে বিশেষজ্ঞ সংস্থা মার্টিন কনসালটিং। ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মার্ক মার্টিনের মতে, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এর আগে এ ভাবে আকাশে পৌঁছয়নি। এ এক ভিন্ন ধরনের গেরিলা যুদ্ধ। এক দল প্রায় সব বিমান-কপ্টার বুক করে অন্য দলকে বিপাকে ফেলছে।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বিমান সাধারণত ৪৫ দিনের জন্য ভাড়া করা হয়। ভাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৫,৭০০ ডলার। কপ্টারের ভাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৭,২০০ ডলার।

‘বিজনেস এয়ারক্রাফট অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আর কে বালির বক্তব্য, ‘‘আগে এলে আগে পাবে ভিত্তিতেই এই ব্যবসা চলে। অন্য সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চার্টার্ড উড়ান সংস্থাগুলিকে। ভোটের সময়ে তারা ক্ষতিপূরণের কিছুটা সুযোগ পায়।’’ বালি জানান, চার্টার্ড দালালের দল উড়ান সংস্থার কাছ থেকে বিমান ভাড়া নেয়। তার পরে সেই বিমান ভাড়া দেওয়া হয় রাজনৈতিক দলকে। পুরো বিষয়টি নিয়ে বেশি গোপনীয়তা বজায় থাকে।

চলতি ভোটে দলের জন্য পাঁচটি কপ্টার ভাড়া করেছেন বিজেপি নেতা গুলাব সিংহ পনওয়ার। বিজেপি অন্যায় সুযোগসুবিধে নিয়েছে, এ কথা মানতে নারাজ তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা ক্ষমতায় আছি। তাই প্রয়োজন বেশি। বিমান ভাড়া নেওয়ার পদ্ধতিতে ভারসাম্য বজায় আছে।’’

জানুয়ারিতে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা দাবি করেন, কংগ্রেস বিমান-কপ্টার ভাড়া করতে হিমসিম খাচ্ছে। এখন অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন তিনি। বিজেপি মুখপাত্র অনিল বালুনিও মন্তব্য করতে রাজি হননি। ২০১৪-র ভোটে শিল্পপতি গৌতম আদানির বিমানে উড়ে বেড়ানো নিয়ে মোদীকে নিশানা করে কংগ্রেস। আদানি পরে জানান, তাঁর সংস্থা বিমান ভাড়া দেয়। কেউ তা বিনা খরচে ব্যবহার করেন না।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক উড়ান ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই ভোটে নগদে খুব কম বিমান-কপ্টারই ভাড়া নেওয়া হয়েছে। নোটবন্দির পরে ওই পথে হাঁটতে রাজি নন অনেকেই। তবে তাঁদের দাবি, তাতে সর্বদা স্বচ্ছতা বজায় থাকছে না। অনেক সংস্থা বিমানের প্রকৃত ভাড়া প্রকাশ করছে না।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ আরতি জেরথের মতে, ‘‘বিমান-কপ্টারে কেবল কম সময়ে যাতায়াত করা যায় না। গ্রামের ভোটারদের উপরে এখনও এগুলির প্রভাব অনেক। বিমান-কপ্টার দেখলেই তাঁরা দৌড়ে আসেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE