Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Lal Krishna Advani

বিজেপির বিরোধিতা করলেই অ্যান্টিন্যাশনাল নয়, নিস্তব্ধতা ভেঙে নিজের ব্লগে বিস্ফোরক আডবাণী

নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটির হাতে বিজেপির কর্তৃত্ব যাওয়ার পর থেকেই দলের মধ্যে একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন আডবাণী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও লালকৃষ্ণ আডবাণী। —ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও লালকৃষ্ণ আডবাণী। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ২১:০১
Share: Save:

অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন ভারতীয় রাজনীতির ‘লৌহমানব’। সে জন্য নিজের ব্লগকেই বেছে নিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। সেখানে দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য এবং গণতন্ত্র জারি রাখার উপদেশ দিলেন বিজেপির এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। একই সঙ্গে বললেন, কেউ রাজনৈতিক ভাবে দলের বিরোধিতা করলেই তাঁকে অ্যান্টিন্যাশনাল বলতে হবে, এই ঐতিহ্য বিজেপির নয়।

নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটির হাতে বিজেপির কর্তৃত্ব যাওয়ার পর থেকেই দলের মধ্যে একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন আডবাণী। এই নির্বাচনে যে নিজের গাঁধীনগর কেন্দ্র থেকে তাঁকে আর টিকিট দেওয়া হবে না, তা জানানো হয়েছিল একেবারে শেষ মুহূর্তে। শুধু আডবাণী নন, এই নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে টিকিট দেওয়া হয়নি দলের আর এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুরলীমনোহর জোশীকেও। এই সিদ্ধান্ত যে তাঁর পছন্দ নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন জোশী, কিন্তু কোনও ভাবেই মুখ খোলেননি আডবাণী। সেই নীরবতাই শেষ পর্যন্ত তিনি ভাঙলেন নিজের ব্লগে।

নিজের ব্লগে এই লেখাটির নাম আডবাণী দিয়েছেন, ‘নেশন ফার্স্ট, পার্টি নেক্সট, সেলফ লাস্ট’, অর্থাৎ ‘প্রথমে দেশ, তার পর দল, শেষে ব্যক্তি’। সেই ব্লগে ৯১ বছরের আডবাণী লিখেছেন, ‘দলের মধ্যে এবং দলের বাইরে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য রক্ষা করা বিজেপির অন্যতম সম্পদ।’ একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং বৈচিত্রকে সম্মান জানানোই ভারতীয় গণতন্ত্রের সম্পদ। মতের অমিল হলেই তাঁকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে, জন্মলগ্ন থেকে কোনও দিন এই মতবাদে বিশ্বাসী ছিল না বিজেপি। তাঁর কথায়, ‘রাজনৈতিক ভাবে এবং ব্যক্তিগত স্তরেও প্রত্যেক নাগরিকের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে চিরকালই উদ্যোগী ছিল বিজেপি।’

আরও পড়ুন: নমো টিভি ‘সংবাদ নয়, বিশেষ পরিষেবা’, ব্যাখ্যা দিল টাটা স্কাই

আরও পড়ুন: রেকর্ড দশ গুণ লাফ! নোটবন্দির বছরে রিটার্ন জমা দেননি ৮৮ লক্ষ আয়করদাতা

যদিও এর পরেই সব থেকে বিস্ফোরক অংশটি পাওয়া গিয়েছে তাঁর লেখায়। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক ভাবে কেউ মতের বিরোধী হলেই তাঁকে অ্যান্টিন্যাশনাল বলা হবে, এই বিশ্বাস কোনও দিন ছিল না বিজেপির মধ্যে।’ এ ছাড়া দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও বেশ কয়েক বার নিজের লেখায় ছুঁয়ে গিয়েছেন আডবাণী।

আডবাণীর এই টুইটে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খোদ নরেন্দ্র মোদীও। তিনিও পাল্টা টুইট করে আডবাণীর মতকে সমর্থন করেন ও লেখেন, ‘‘আডবাণীজি বিজেপির প্রকৃত সার কথা, বিশেষ করে দলের গাইডিং মন্ত্র ‘নেশন ফার্স্ট, পার্টি নেক্সট, সেলফ লাস্ট’-কে সুন্দর ভাবে একসূত্রে গেঁথেছেন। বিজেপি-র কার্যকর্তা হিসাবে গর্ববোধ করি এবং এল কে আডবাণীজির মতো মহৎ নেতারাই এই দলকে আরও মজবুত করে তুলেছে।’’ শুধু তা-ই নয়, আডবাণীর ব্লগটিকেও নিজের লেখায় শেয়ার করেন তিনি। যদিও আডবাণীর গোটা টুইটে বিজেপি প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষের ইঙ্গিত থাকলেও সেই বিতর্কে অংশ নেননি মোদী।

বিজেপি সূত্রের খবর ষোড়শ লোকসভাতেও প্রায় নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছিল আডবাণীকে। তাঁকে যে এই নির্বাচনে প্রার্থী করা হচ্ছে না, সেই খবরও দলের সভাপতি অমিত শাহ তাঁকে নিজে জানাননি। দলের এক জন কর্মীকে দিয়ে এই খবর পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। অথচ তাঁর কেন্দ্র থেকেই এই নির্বাচনে লড়ছেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেই ক্ষোভই নিজের ব্লগে উগরে দিলেন ৯১ বছরের বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, মনে করা হচ্ছে এমনটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE