Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সব বুথে যন্ত্র, সন্দেহের গন্ধ তবু থেকেই গেল

আজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ফের জানিয়ে দেওয়া হয়, বিরোধীদের দাবি মেনে ব্যালটে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। পরিবর্তে স্বচ্ছতা আনতে ইভিএমের সঙ্গেই প্রতিটি বুথে ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল বা ‘ভিভিপ্যাট’ যন্ত্র লাগানো থাকবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

নির্বাচনের দিন ঘোষণা হল বটে, কিন্তু ইভিএম ঘিরে ধোঁয়াশা রয়েই গেল।

আজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ফের জানিয়ে দেওয়া হয়, বিরোধীদের দাবি মেনে ব্যালটে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। পরিবর্তে স্বচ্ছতা আনতে ইভিএমের সঙ্গেই প্রতিটি বুথে ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল বা ‘ভিভিপ্যাট’ যন্ত্র লাগানো থাকবে। তার ফলে কারচুপির আশঙ্কা থাকবে না। কিন্তু প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে কত শতাংশ বুথের ইভিএম ও ভিভিপ্যাট যন্ত্রে পড়া ভোটের তুলনা করা হবে, তা নিয়ে নীরব থেকেছে কমিশন। উল্টে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা জানিয়েছেন, ‘‘ইভিএমের অবস্থা দাঁড়িয়েছে ফুটবলের মতো। জিতলে সমস্যা নেই। হারলেই স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’’ নতুন পদক্ষেপ হিসেবে ভোটারদের সংশয় দূর করতে প্রত্যেক প্রার্থীর পাশে তাঁর ছবি থাকবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

চলতি নির্বাচনে ২৩ লক্ষ ইভিএম, ১৬ লক্ষ কন্ট্রোল ইউনিট ও প্রায় সাড়ে সতেরো লক্ষ ভিভিপ্যাট যন্ত্র ব্যবহার করতে চলেছে কমিশন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জেতার পরেই ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলে সরব হন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। তাঁর দেখাদেখি একে একে সরব হন অখিলেশ যাদব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরীবাল ও রাহুল গাঁধীর মতো বিরোধী নেতারা। বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি সরকারের শরিক শিবসেনাও ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। লন্ডন থেকে এক জন দাবি করেন, নিম্ন কম্পাঙ্কের তরঙ্গ ব্যবহার ইভিএমে কারচুপি সম্ভব। আর তা করেই গত লোকসভা নির্বাচন জিতেছিল বিজেপি। বিরোধীদের পক্ষ থেকে ব্যালটের পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার দাবি জানানো হয়। সেই দাবি যে মানা সম্ভব নয়, তা আগে জানিয়ে দিয়েছিল কমিশন।

আজ ফের কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে ইভিএমের সঙ্গে সব বুথে ভিভিপ্যাট যন্ত্র লাগানো থাকবে। ওই যন্ত্রে ভোটার কাকে ভোট দিলেন তা ৭ সেকেন্ডের জন্য ফুটে ওঠে। এবং সেই তথ্য মেশিনে জমা থাকে। বিরোধীদের দাবি ছিল, ব্যালটে ফেরা একান্তই সম্ভব না হলে কোনও একটি কেন্দ্রের পঞ্চাশ শতাংশ বুথে ইভিএমে পড়া ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাটে জমা হওয়া তথ্য তুলনা করে দেখা হোক। তাতে সন্দেহ অনেকটা কমবে।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফায় নির্বাচন, দেখে নিন কবে-কোথায় ভোট

কমিশন শুরু থেকেই কারচুপির প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু উনিশের ভোটের কথা ভেবে কমিশন কোনও নতুন সিদ্ধান্ত নেয় কি না, তা
জানতে উদ্‌গ্রীব ছিল সব শিবিরই। বিরোধীদের দাবি মতো পঞ্চাশ শতাংশ বুথের ভোট গোনার দাবি প্রথমেই খারিজ করে দেন কমিশন কর্তারা। পরিবর্তে নতুন সমীকরণ কী হবে, তা নিয়েও অবশ্য আজ মুখ খোলেননি কোনও কমিশন কর্তাই। তবে আজ অরোরা জানিয়েছেন, কত কেন্দ্রের দুই যন্ত্রের তথ্যের মধ্যে তুলনা করে দেখা হবে, তা নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট’। তাদের রিপোর্ট ফলাফলের আগেই চলে আসবে। তার পরেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার আগে পর্যন্ত পুরনো নিয়ম চলবে।

সেই নিয়মে বলা হয়েছে, কোনও একটি লোকসভা কেন্দ্রে যত বিধানসভা আসন রয়েছে, তার প্রতিটিরই কোনও একটি বুথের ফলাফল খতিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎ একটি লোকসভা কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভা আসন থাকলে সাতটি বুথের ইভিএম ও ভিভিপ্যাটে জমা পড়া তথ্যের তুলনা করে দেখবে কমিশন। এ ছাড়া কোনও বুথের ফল নিয়ে বিতর্ক (জয়-পরাজয়ের ব্যবধান খুব কম বা খুব বেশি) হলে সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতির ভিত্তিতে দুই যন্ত্রে পড়া ভোট গণনা করে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 VVPAT
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE