Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অবশেষে কথা হল রাহুল-মমতার, সঙ্গে রইলেন সনিয়া

বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতা হিসেবে রাহুলকে আগাম মান্যতা দিতে মমতার যে আপত্তি আছে, সেটা রাজনৈতিক শিবিরে অজানা তথ্য নয়। সেই কারণেই, ইউপিএ-র পাশাপাশি ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে উদ্যোগী তিনি। কিন্তু সম্প্রতি দলীয় বৈঠকে রাহুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বা মায়াবতীকে মেনে নিতে তাঁর আপত্তি নেই। সেই মন্তব্য প্রেক্ষাপটে বদল এনেছে বলে অনেকের মত।

সাক্ষাৎ: ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ১০ জনপথে। ছবি: পিটিআই।

সাক্ষাৎ: ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ১০ জনপথে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১২
Share: Save:

কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক হল তৃণমূল নেত্রীর। সেখানে অবশ্য হাজির ছিলেন সনিয়াও। আর দশ জনপথ থেকে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা সবাই রাজা! সবাই সবার জন্য। সংসদের ভিতরে যদি সমস্ত বিরোধী দল এককাট্টা হয়ে লড়তে পারে, তা হলে বাইরেই বা পারবে না কেন? সবাই মিলে কী ভাবে লড়াই করা যায় তা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে।’’

বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতা হিসেবে রাহুলকে আগাম মান্যতা দিতে মমতার যে আপত্তি আছে, সেটা রাজনৈতিক শিবিরে অজানা তথ্য নয়। সেই কারণেই, ইউপিএ-র পাশাপাশি ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে উদ্যোগী তিনি। কিন্তু সম্প্রতি দলীয় বৈঠকে রাহুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বা মায়াবতীকে মেনে নিতে তাঁর আপত্তি নেই। সেই মন্তব্য প্রেক্ষাপটে বদল এনেছে বলে অনেকের মত।

কংগ্রেস সূত্র অবশ্য বলছে, রাজনৈতিক আলোচনা যে দলীয় সভাপতির সঙ্গেই করতে হবে, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল মমতাকে। এ ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন সনিয়াও। অন্য দিকে তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, সনিয়ার সঙ্গেই দেখা করেছেন মমতা। সেখানে রাহুল উপস্থিত ছিলেন। বস্তুত মমতা নিজেও বলেছেন, ‘‘আমি সনিয়াজির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। রাহুলও ছিলেন। সনিয়াজির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই পুরনো, রাজীবজির সময় থেকেই।’’

কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, তৃণমূল নেত্রী এ দিন বিভিন্ন বিরোধী নেতার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন সংসদ ভবনে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদের কন্যা মিসা, এসপি-র রামগোপাল যাদব, জয়া বচ্চন, টিডিপি-র ওয়াই এস চৌধুরি, ডিএমকে-র তিরুচি শিবা, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত-সহ জগন কংগ্রেস, কেরল কংগ্রেসের নেতারা। কিন্তু সবচেয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে দুই কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ এবং আহমেদ পটেলের সঙ্গে।

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আজ তাঁর বিরোধী রাজনীতির গতিপথে সূক্ষ্ম বদল ঘটালেন মমতা। তবে তাঁদের এ-ও বক্তব্য, আজকের বৈঠকের অর্থ এটা নয় যে বিরোধী জোটের কাণ্ডারি হিসাবে তিনি রাহুলকে মেনে নিলেন। পাশাপাশি মমতা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কেন্দ্রে সবাই একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে ঠিকই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে এক ইঞ্চি জমিও তিনি ছাড়তে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘যে রাজ্যে যে বিরোধী দল শক্তিশালী সেখানে সে-ই লড়ুক। বাকিরা তার প্রার্থীকে সমর্থন করবে। বাংলায় আমরাই লড়ে নেব।’’

আরও পড়ুন: ‘ঘৃণা ছড়াচ্ছেন মমতা’! অসমে থানায় অভিযোগ বিজেপির

বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে, আজ সারা দিন ধরে বারবার এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে মমতাকে। তাঁর জবাব, ‘‘সবাই মিলে ভোট লড়া হবে। ফলাফলের পর সবাই মিলে বসে নেতা স্থির করা হবে।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রিত্ব এখনই আমার কাছে কোনও অর্থ বহন করছে না। গরিব মানুষ, কৃষ,ক শ্রমিক সবাই যাতে ভাল ভাবে বাঁচতে পারেন সেটাই আসল লক্ষ্য। বিজেপি বিরোধীদের মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে শাসন করতে চাইছে। আমাদের কৌশল হল একসঙ্গে থাকা।’’

সেই ঐক্য গড়ার লক্ষ্যেই এ দফার দিল্লি সফরকে কাজে লাগিয়েছেন মমতা। বিকেলে কর্নাটক ভবনে গিয়ে জেডিএস নেতা দেবগৌড়ার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রাতে তাঁর বাড়ি আসেন অরবিন্দ কেজরীবাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meeting Mamata Banerjee Rahul Gandhi Sonia Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE