Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

এনরেগার তদারকিতে নয়া অ্যাপ কাছাড়ে

ফের মোবাইল অ্যাপের জন্য প্রশংসা কুড়োল কাছাড় জেলা।বিধানসভা নির্বাচনে ‘পোল ফ্রেন্ড’ নামে নতুন অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল কাছাড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০০
Share: Save:

ফের মোবাইল অ্যাপের জন্য প্রশংসা কুড়োল কাছাড় জেলা।

বিধানসভা নির্বাচনে ‘পোল ফ্রেন্ড’ নামে নতুন অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল কাছাড়ে। ইভিএম বিলি থেকে জমা পর্যন্ত কোন ইভিএম কোথায় কী অবস্থায় রয়েছে, সারাক্ষণ জানান দিচ্ছিল ওই অ্যাপ। এমন উদ্ভাবনের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রশংসায় ভাসিয়েছিল কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথনকে।

এ বার তাঁরই উদ্যোগে নতুন মোবাইল অ্যাপ তৈরি হল ‘মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীন রোজগার সুনিশ্চিত প্রকল্পের’ (এমজিএনরেগা) তদারকির জন্য। বিশ্বনাথন জানান, গ্রামোন্নয়ন বিভাগের সমস্ত পঞ্চায়েত সচিব, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, বিডিওদের ওই অ্যাপ দেওয়া হয়েছে। কাছাড়ে হাজারের বেশি এমজিএনরেগা প্রকল্প রয়েছে। ওইসব প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। কোথায় কত টাকা খরচ হচ্ছে, কাজকর্মের অগ্রগতি কতটা সবই সবাই অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারছেন। কাছাড় জেলায় গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছিল সরকারি অর্থ তছরূপের কথা। বিশ্বনাথন বলেন, ‘‘আমি কাজে যোগ দিয়েই নানা কথা শুনতে পাই। ভাবতে থাকি, কী করে ও সব বন্ধ করা যায়। একা কিংবা এক-দু’জন অফিসার মিলে হাজার প্রকল্পের নিয়মিত তদারকি কোনও মতেই সম্ভব নয়। নিজে ইঞ্জিনিয়ার বলে মনে হল, যা করার প্রযুক্তির সাহায্যেই করতে হবে।’’ তিনি এ নিয়ে কথা বলেন এনআইসি-র নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার কুমারজিৎ নন্দীচৌধুরীর সঙ্গে। তৈরি হয় নতুন অ্যাপ। জেলাশাসকের কথায়, ‘‘এ সবে গ্রামোন্নয়ন প্রকল্প অধিকর্তা দীপশিখা দে এবং এপিও মাধব রায়ের ভূমিকাও কম নয়। এঁরাই অ্যাপ ছড়িয়ে দেন পঞ্চায়েতে-পঞ্চায়েতে। সকলের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।’’ কী ভাবে সাহায্য করে এই অ্যাপ? বিশ্বনাথন জানান, এই অ্যাপের সাহায্যে জেলাশাসক, প্রকল্প অধিকর্তা-সহ সবাই জানতে পারছেন, কোন প্রকল্প দেখভালের দায়িত্ব কোন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের। জুনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা কবে কোথায় পরিদর্শনে যাচ্ছেন, গিয়ে কী দেখছেন, অ্যাপের মাধ্যমে জানাতে হয়। ফলে পরিদর্শনে না গিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার সুযোগ নেই। জিপি সচিব থেকে শুরু করে যাঁদের মোবাইলেই ওই অ্যাপ রয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে তাঁদের অ্যাপের সাহায্যেই কাজের অগ্রগতি জানাতে হবে। তাতে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব বলেই আশাবাদী জেলাশাসক বিশ্বনাথন। তিনি জানান, মাসতিনেক হয়েছে সংশ্লিষ্টদের হাতে অ্যাপ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বছর পেরোলে তার সুফল টের পাওয়া যাবে।

সুফল যে মিলবে, সে ভরসা রয়েছে রাজ্য সরকারেরও। তাই এ বার স্বাধীনতা দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পুরস্কারের তালিকার প্রথম নামটিই কাছাড় জেলার। মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে প্রকল্প তদারকির জন্য প্রথম পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন, প্রকল্প অধিকর্তা দীপশিখা দে, এপিও মাধব রায় এবং নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার কুমারজিৎ নন্দীচৌধুরী।

বিশ্বনাথন একই সঙ্গে গুয়াহাটি শহরের জঞ্জাল নিষ্কাশনে দক্ষতার জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। কাছাড়ের জেলাশাসকের আগে তিনি ছিলেন গুয়াহাটি পুর করপোরেশনের কমিশনার। প্রশাসনিক সেবার তিন বিভাগে মোট দশটি পুরস্কার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এ ছাড়া ৪৩ জনকে সাহিত্য পেনশন, ৭০ জনকে শিল্পী পেনশন দেওয়া হবে। ক্রীড়া পেনসনের জন্যও ৪০ জনকে মনোনীত করা হয়েছে। সঙ্গে শিল্পক্ষেত্রের ৫০ জন ও ক্রীড়াক্ষেত্রের ২০ জনকে দেওয়া হবে অনুদান।

বরাক উপত্যকা থেকে সাহিত্য পেনশনের জন্য এক জনকেই বাছাই করা হয়েছে। তিনি হলেন লোকগবেষক অমলেন্দু ভট্টাচার্য। শিল্পী পেনশন পাবেন শিলচরের মনোরঞ্জন মালাকার, গোপীকান্ত সিংহ, সুরেশচন্দ্র পাল, হাইলাকান্দির হরেন্দ্রচন্দ্র নাথ ও করিমগঞ্জের শিবাণী ব্রহ্মচারী। শিল্পী হিসেবে এককালীন অনুদানের জন্য মনোনীত হয়েছেন শিলচরের রমেশচন্দ্র পাল, বড়খলা মাছুঘাটের বনমালী সিংহ, লালা বড়বন্দের লেইমাচাউবি সিংহ, করিমগঞ্জ সুভাষনগরের রাজশেখর মিত্র মজুমদার এবং পাথারকান্দির রঞ্জিত পুরকায়স্থ। ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদানের জন্য মাসিক পেনসন পাবেন কাছাড় জেলার দেবজ্যোতি চৌধুরী, ব্রজলাল সিংহ, সামসুল হক বড়ভুইয়া ও নন্দদুলাল রায়, করিমগঞ্জের বিনয়রঞ্জন দাস ও অনাদিকুমার দাস। হাইলাকান্দির অসমঞ্জ ভট্টাচার্য পাচ্ছেন এককালীন অনুদান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New App Silchar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE