শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার কলম্বোয়। ছবি: রয়টার্স।
প্রায় তিন দশক পরে শ্রীলঙ্কায় পা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। রাজীব গাঁধীর পরে এই প্রথম। দ্বীপরাষ্ট্রের নয়া সরকারের সঙ্গে আরও গভীর মৈত্রীর বার্তা দিলেন নরেন্দ্র মোদী।
মাহিন্দা রাজাপক্ষের পতনের পরে কলম্বো-দিল্লির মৈত্রীর পথ সুগম হয়েছে বলে মনে করেছিলেন কূটনীতিকেরা। এমনকী রাজাপক্ষের পতনের পিছনেও দিল্লির হাত আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ একটি সাক্ষাৎকারে সেই অভিযোগ করেছেন খোদ রাজাপক্ষেই। সেই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। তবে কলম্বোর নতুন শাসকেরা ভারতের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। কিন্তু শ্রীলঙ্কার জলসীমার মধ্যে ভারতীয় ধীবরদের ঢুকে পড়া নিয়ে সম্প্রতি তিক্ত হয়ে ওঠে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ভারতীয় ধীবরেরা শ্রীলঙ্কার জলসীমায় ঢুকলে তাঁদের গুলি করা হবে বলে হুমকি দেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা সফরের সময়ে এই মন্তব্যের কড়া জবাব দেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
কূটনীতিকদের মতে, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল তথা এশিয়ায় মিত্র দেশের সংখ্যা বাড়াতে চাইছে মোদী সরকার। চিনের সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে গেলে এই ধরনের মিত্র দেশের সমর্থন ভারতের পক্ষে খুবই প্রয়োজনীয়। ধীবরদের নিয়ে তিক্ততা যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুর পুরোটা না কেটে দেয় সেই চেষ্টাই করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেই হিসেব মেনেই আজ শ্রীলঙ্কায় সমাজের সব অংশকে নিয়ে চলার চেষ্টার জন্য প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার প্রশংসা করেছেন মোদী। কিন্তু সেই সঙ্গে তামিলদের নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথাও জানিয়ে দিয়েছেন সুকৌশলে। তাঁর কথায়, “শ্রীলঙ্কার সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী দ্রুত কার্যকর করে তামিলদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা তুলে দেওয়া উচিত।”
শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তামিল আবেগের অঙ্ক মাথায় রাখতে হয় দিল্লিকে। তামিল অধ্যুষিত উত্তর শ্রীলঙ্কায় ইতিমধ্যেই বড় ধরনের নির্মাণ কাজ করছে ভারত। আগামী কাল জাফনায় গিয়ে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন মোদী। আবার বৌদ্ধ সিংহলি জাতীয়তাবাদীদের খুশি করতে আজ বৌদ্ধ ঐতিহ্যের শহর অনুরাধাপুরায় যান তিনি। সেখানে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার সিংহলি অধ্যুষিত মাতারা জেলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করবে ভারত।
ধীবরদের বিষয়টি অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর পিছু ছাড়েনি। সিরিসেনার সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মোদী জানান, এই বিষয়টির সঙ্গে দু’দেশের মানুষের জীবিকা ও বেঁচে থাকা জড়িয়ে। তাই এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy