Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাম রহিমই খুনের ছক কষেন, দাবি সাধুর

লেখরাজ জানান, গুরুদাস আদালতে বলেছেন, তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০২ পর্যন্ত ডেরায় ছিলেন। বাবার গুফার সাফ-সাফাইয়ের দায়িত্ব ছিল তাঁর। সে জন্য তিনি সব ঘরেই যেতে পারতেন।

রামচন্দ্রের স্ত্রী কুলবন্ত ও ছেলে অংশুল ছত্রপতি।

রামচন্দ্রের স্ত্রী কুলবন্ত ও ছেলে অংশুল ছত্রপতি।

সুব্রত বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৫৬
Share: Save:

‘পুরা সচ্’ পত্রিকার রামচন্দ্র ছত্রপতিকে খুনের অভিযোগে ধৃত দুই শার্প শুটারই ডেরা সচ্চা সৌদার সাধু। নির্মল ও কুলদীপ নামের ওই দুই ব্যক্তির লিঙ্গচ্ছেদও করা হয়েছিল ডেরাতেই। শুধু তা-ই নয়, সিবিআই আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ডেরার প্রাক্তন এক সাধু গুরুদাস সিংহ তুর দাবি করেছেন, বাবা হজুর গুরমিত রাম রহিম সিংহই এই হত্যার পরিকল্পনা করেন। গোটা পরিকল্পনাটি তাঁর সামনেই করা হয় বলে বয়ান দিয়েছেন গুরুদাস। তিনি আদালতে আরও জানান, শুধু নির্মল আর কুলদীপই নয়— ডেরার পাঁচশো সাধুর মধ্যে ১৭৫ জনের লিঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে। আর এদের নিয়েই তৈরি হয়েছে খোজা বাহিনী।

রামচন্দ্রের বন্ধু আইনজীবী লেখরাজ ঢোট রবিবার আনন্দবাজারকে ফোনে জানান, গুরুদাস আদালতে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট রামচন্দ্র ও প্রাক্তন সাধু রঞ্জিতকে (যিনি রামচন্দ্রকে খবর দিতেন) খুনের পরিকল্পনা করেছেন বাবা নিজেই। রামচন্দ্র খুনের সময় যে রিভলভারটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও কৃষাণ নামে বাবার এক চেলার বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই।

আরও পড়ুন:এত জঘন্য অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি

লেখরাজ জানান, গুরুদাস আদালতে বলেছেন, তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০২ পর্যন্ত ডেরায় ছিলেন। বাবার গুফার সাফ-সাফাইয়ের দায়িত্ব ছিল তাঁর। সে জন্য তিনি সব ঘরেই যেতে পারতেন। গুরুদাস আদালতে বলেছেন, একদিন তিনি শোনেন, বাবা নির্মল এবং কুলদীপকে এই হত্যার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি আদালতে আরও জানিয়েছেন, বাবার অনাচার দেখে অনেক সাধুই পালাতেন। যাতে তাঁরা সংসারে ফিরে যেতে না পারেন, সে জন্যই লিঙ্গচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়। গুরুদাস আদালতে জানিয়েছেন, এই খোজা বাহিনীকে বাবার হারেম পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হতো। এদেরই লাগানো হতো শত্রু নিধনেও। আদালতে গুরুদাসের দাবি, এর প্রতিবাদ করেছিলেন গোরা নামের এক সাধু। পরে তিনি গায়েব হয়ে যান। গুরুদাস হংসরাজ নামে ডেরার এক প্রাক্তন সাধুকেও আদালতে হাজির করেন। মেডিক্যাল পরীক্ষায় দেখা যায়, তাঁরও লিঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে।

পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্ট দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের মামলায় গুরমিতের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। পৃথক ভাবে শুরু হয় রামচন্দ্র ও রঞ্জিত হত্যা-মামলা। তিনটি তদন্তের দায়িত্বেই সিবিআই অফিসার সতীশ ডাগার। রামচন্দ্রের ছেলে অংশুল রবিবার বলেন, ‘‘নতি স্বীকার না করে তদন্ত চালিয়ে গিয়েছেন সতীশজি।’’ ধর্ষণের পরে জোড়া হত্যা-মামলারও বিচার চলছে বিচারক জগদীপ সিংহের এজলাসে। ন্যায় মিলবে বলে আশা করছে রঞ্জিত-রামচন্দ্রের পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE