বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। রাজ্যসভায়, বৃহস্পতিবার। সৌজন্যে: রাজ্যসভা টিভি।
যাওয়ার সময় কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি’কে কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিলেন বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি।
এক সাক্ষাৎকারে বললেন, দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ দারুন অস্বস্তিতে রয়েছেন। তাঁরা ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়। সব ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি সহিষ্ণুতার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবারই ছিল তাঁর শেষ দিন। উপরাষ্ট্রপতিকে বিদায় সংবর্ধনা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদে বলেন, ‘‘আমরা আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’’ কিন্তু তার পরেই সংসদ চত্বরের বাইরে বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতির মন্তব্যের কড়া সমালোচনায় নেমে পড়েন বিজেপি নেতারা। বিজেপি’র জাতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘উনি (হামিদ আনসারি) আগে এ সব বলতেন না। এখন চলে যাওয়ার সময় এই সব বলছেন! বিশেষ কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই সব বলছেন উনি। যা ওঁর পদমর্যাদার সঙ্গে মানানসই নয়। ওঁর এমন আলটপকা মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। আমরা (বিজেপি) ওঁর এই মন্তব্য মেনে নিতে রাজি নই।’’ একই সুর শোনা গিয়েছে এ দিন ভাবী উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর গলাতেও। বেঙ্কাইয়ার কথায়, ‘‘কেউ কেউ বলছেন, এ দেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নন। কিন্তু এটা একেবারেই রাজনৈতিক মন্তব্য।’’
আরও পড়ুন- সুকনা থেকে বাহিনী গেল সীমান্তে, সিকিমে গ্রাম খালি করা শুরু
আরও পড়ুন- ডোকলাম আমাদেরই, চিনের দাবি নস্যাৎ করে বলল ভুটান
প্রধানমন্ত্রী মোদী বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতির ‘কাছ থেকে অনেক কিছু’ শিখেছেন বলে রাজ্যসভায় কবুল করলেও, বিজেপি যে তাঁর সংসদীয় কাজকর্মের মূল্যায়ন করে অন্য ভাবে, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রের শাসক দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিজয়বর্গীয়। সংসদীয় কাজকর্মের ক্ষেত্রে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দ্বিধা করেননি, রাজ্যসভায় বিজেপি উপরাষ্ট্রপতির শেষ দিনটিতে। বিজয়বর্গীয়ের কথায়, ‘‘উনি বেশ কয়েকটি ভুল করেছেন। সেগুলি ইচ্ছা করেই করেছিলেন নাকি তা করেননি, সেটা অবশ্য বলতে পারব না।’’
উপরাষ্ট্রপতির বিদায়ের দিনে সর্বভারতীয় স্তরে শাসক দল বিজেপি’র অন্যতম শীর্ষ নেতার ওই মন্তব্য নিয়ে সর্বত্র আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। দেখা দিয়েছে কিছুটা বিস্ময়ও। কারণ, বৃহস্পতিবারই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান আনসারিকে বিদায় সংবর্ধনা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী সংসদে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতির কাছ থেকে তিনি ও অন্য রাজনীতিকরা অনেক কিছু শিখেছেন। প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, ‘‘ওঁর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। উনি এমন একটি পরিবারের সন্তান, যে পরিবার গত ১০০ বছর ধরে দেশের মানুষের সেবা করেছে, করে চলেছে।’’
আরও পড়ুন- ‘ঈশ্বরের মন’ পড়তে পেরেছিলেন আইনস্টাইন!
এ দিন রাজ্যসভায় উপরাষ্ট্রপতিকে বিদায় সংবর্ধনা জানাতে গিয়ে অতীতচারণ করেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেন আনসারিকে। জেটলি তাঁকে বলেন, ‘‘আপনার সময় অনেক মজার ঘটনা ঘটেছে। একটার কথা মনে পড়ছে। সভায় বিতর্ক, চাপানউতোর চলার সময় আপনি বলেছিলেন এখানে একটা ‘ফেডারেশন অফ অ্যানার্কিস্টস’ (নৈরাজ্যবাদীদের জোট) তৈরি হয়েছে! আমি উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, আপনার মন্তব্য সভার রেকর্ড থেকে বাদ দিতে হবে। আপনি রেগে যাননি। মন্তব্যটি রেকর্ড থেকে বাদ দিয়েছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy