দলীয় নেতা অনন্তকুমার হেগড়ের বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
মহাত্মা গাঁধীকে নিয়ে দলীয় নেতা অনন্তকুমার হেগড়ের বিতর্কিত মন্তব্যের ধাক্কা সামলাতে ব্যাট ধরলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস তথা বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা-হইচইয়ের মাঝে সংসদে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার মোদীর দাবি, “গাঁধীজি আমাদের জীবন।”
এ দিন অনন্তকুমার হেগড়ের মন্তব্য নিয়ে সংসদে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়েন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ভাষণের মাঝেই হইচই জুড়ে দেন কংগ্রেস তথা বিরোধী সাংসদেরা। তার প্রতিক্রিয়ায় বিরোধীদের কটাক্ষের সুরে মোদী বলেন, “ব্যস্! এটুকুই? আর কিছু!” এর পর তিনি বলতে শুরু করার চেষ্টা করলে বিরোধী আসন থেকে বার বার স্লোগান ওঠে, “মহাত্মা গাঁধী অমর রহে!” এর কিছু ক্ষণ পরে প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রশ্নের উত্তরে লোকসভায় কংগ্রেসে দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, “এটা তো এখন কেবলমাত্র ট্রেলার।” তার প্রত্যুত্তরে মোদীর মন্তব্য: “আপনার জন্য গাঁধী ট্রেলার হতে পারেন। তবে আমাদের জন্য গাঁধীজিই জীবন।”
গত সপ্তাহে মহাত্মা গাঁধীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দলীয় নেতা অনন্তকুমার হেগড়ে। শনিবার বেঙ্গালুরুর একটি অনুষ্ঠানে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গাঁধীর ভূমিকা নিয়ে ভাষণে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন তিনি। কটাক্ষের সুরে হেগড়ের দাবি ছিল, মহাত্মা গাঁধীর নেতৃত্বে গোটা স্বাধীনতা সংগ্রামটাই আসলে একটি ‘নাটক’। তাঁর মতে, “ব্রিটিশ শাসকের অনুমতি ও সমর্থনেই সেই নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।” দেশের স্বাধীনতা লাভ করা নিয়েও সে দিন নিজের তত্ত্ব শুনিয়েছিলেন হেগড়ে। তিনি বলেছিলেন, “মানুষ কংগ্রেসকে সমর্থন করে বলে যে আমরণ অনশন এবং সত্যাগ্রহের ফলে ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছে। কিন্তু, তা ঠিক নয়। ব্রিটিশরা (মহাত্মা গাঁধীর) সত্যাগ্রহের ভয়ে এ দেশ ছেড়ে যায়নি। ব্রিটিশরা হতাশ হয়েই আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছিল।” সেই সঙ্গে হেগড়ের মন্তব্য, “যখন ইতিহাস পড়ি, তখন আমার রক্ত ফুটতে থাকে। এমন মানুষকে আমাদের দেশে মহাত্মার আসন দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: শিনা বরা হত্যাকাণ্ড: জামিন পেলেন পিটার মুখোপাধ্যায়
আরও পড়ুন: বিভাজনের সময় এ দেশে থেকে গিয়ে মুসলিমরা দয়া করেননি, বললেন আদিত্যনাথ
ওই মন্তব্যের পরই কংগ্রেসের আক্রমণের মুখে পড়েন হেগড়ে। এ ধরনের মন্তব্যে চরম অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি শিবির। হেগড়েকে বিনাশর্তে দুঃখপ্রকাশ করতে বলেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে শেষমেশ দুঃখপ্রকাশ করা তো দূরের কথা, সংবাদমাধ্যমের ঘাড়েই যাবতীয় দোষ ঠেলে দিয়ে হেগড়ের দাবি, তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। সে দিন নিজের ভাষণে মহাত্মা গাঁধীর নাম উচ্চারণ করেননি তিনি। যা নিয়ে সোমবার সংসদে তুমুল হইহট্টগোল করেন বিরোধী সাংসদেরা। এ দিনও সেই বিরোধিতার রেশ কমেনি সংসদে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy