ছবি: পিটিআই।
তাঁর বাজেটের হিসেবের সঙ্গে আর্থিক সমীক্ষার হিসেব মিলছে না। বাজেটে দেশের জিডিপি সম্পর্কে এক রকম তথ্য রয়েছে। আর্থিক সমীক্ষায় আর এক রকম। কর বাবদ আয়ের হিসেব নিয়েও একই রকম গরমিল। বাজেটের ইতিহাসে এমন গরমিল এই প্রথম বলেই মত অর্থনীতিবিদদের।
এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে আজ অর্থমন্ত্রী থেকে শিক্ষিকা হয়ে উঠতে চাইলেন নির্মলা সীতারামন। লোকসভায় বাজেট বিতর্কের জবাব দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নতুন অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘মাঝে মাঝে আমি এক দল ছাত্রছাত্রীর সামনে শিক্ষিকার মতো বক্তৃতা করি।’’
অর্থমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে শুরু করে গোটা বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলেছে, ভোটে জিতে আসা সাংসদেরা কি অর্থমন্ত্রীর ‘ছাত্র’? তাতেও না দমে নির্মলা শিক্ষিকার ঢঙেই মন্তব্য করেছেন, কোনও প্রশ্ন নিয়ে সংসদে তাঁর ঘরে এলেই তিনি সব কিছু বুঝিয়ে দেবেন।
বিরোধী সাংসদেরা অবশ্য বাধ্য ছাত্রের মতো ‘দিদিমণির’ কথা শুনতে রাজি হননি। কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘কোনও সন্দেহ হলে আমরা প্রশ্ন তুলবই। অর্থমন্ত্রীর জবাব শোনার মানে এই নয় যে উনি আমাদের বিভ্রান্ত করতে থাকবেন, আমরাও হতে থাকব।’’
এর পর পেট্রল-ডিজেলে ২ টাকা করে সেস বসানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে লোকসভা থেকে ওয়াক-আউট করে কংগ্রেস, এনসিপি, ডিএমকে। তৃণমূলও পেট্রল-ডিজেলের সেস বাড়ানোর প্রতিবাদ করে।
তৃণমূলের সৌগত রায় বারবার নির্মলার কাছে জানতে চান, ব্যাঙ্কগুলির মোট অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কত? উত্তর দেননি নির্মলা। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, প্রশ্নের জবাব না-পাওয়া ও সেস বসানোর প্রতিবাদে তাঁরাও ওয়াক-আউট করছেন।
বিরোধীদের প্রশ্ন ছিল, বাজেটের নথিতে বলা রয়েছে, এ বছরে প্রকৃত জিডিপি আগের অর্থ বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আগের অর্থ বছরের তুলনায় প্রকৃত জিডিপি ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। প্রশ্ন উঠেছিল, অর্থমন্ত্রী কি বাজেটে আনুমানিক জিডিপি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখাচ্ছেন? যাতে রাজকোষ ঘাটতিও কম করে দেখানো যায়?
নির্মলার উত্তর, আর্থিক সমীক্ষায় মে মাসের হিসেব ধরা হয়েছে। আর তিনি জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত জিডিপির আগাম হিসেব ধরেছেন। কারণ, ভোটের আগের অন্তর্বর্তী বাজেটেও তা-ই ধরা হয়েছিল। যদিও দুই অনুমানেই চলতি বছরে জিডিপির আনুমানিক অঙ্ক ২১১ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু গত অর্থ বছরের আয়ের তথ্য জানানোর ক্ষেত্রে তিনি কেন সরকারি অ্যাকাউন্টস দফতরের চূড়ান্ত হিসেব তুলে না ধরে বাজেটের সংশোধিত অনুমান তুলে ধরলেন, সে প্রশ্নের জবাব দেননি নির্মলা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দু’য়ের মধ্যে প্রায় ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকার ফারাক। নির্মলা শুধু বলেছেন, ‘‘কোনও জল্পনার প্রয়োজন নেই। বাজেটের সব তথ্যই খাঁটি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy