Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নীতীশের নেতৃত্বের উপর স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের

রাজ্য বিধানসভায় নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ১৩০ জন বিধায়ককে দিল্লি উড়িয়ে এনেছেন। তাঁদের নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখাও করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি পুনর্দখলের পথে কয়েক পা এগোতে না এগোতেই আদালতে জোর ধাক্কা খেলেন নীতীশ কুমার।

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে (বাঁ দিক থেকে) মুলায়ম সিংহ, শরদ যাদব, লালুপ্রসাদ এবং নীতীশ কুমার। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে (বাঁ দিক থেকে) মুলায়ম সিংহ, শরদ যাদব, লালুপ্রসাদ এবং নীতীশ কুমার। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩২
Share: Save:

রাজ্য বিধানসভায় নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ১৩০ জন বিধায়ককে দিল্লি উড়িয়ে এনেছেন। তাঁদের নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখাও করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি পুনর্দখলের পথে কয়েক পা এগোতে না এগোতেই আদালতে জোর ধাক্কা খেলেন নীতীশ কুমার। মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁজির বদলে নীতীশকে সম্প্রতি জেডিইউয়ের পরিষদীয় দলের নতুন নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন বিহার বিধানসভার স্পিকার উদয়নারায়ণ চৌধুরি। সেই স্বীকৃতির বৈধতা নিয়েই আজ প্রশ্ন তুলে দিল পটনা হাইকোর্ট। ওই সিদ্ধান্তের উপর আপাতত সাত দিনের স্থগিতাদেশ জারি করেছে প্রধান বিচারপতি এল নরসিংহ রেড্ডি এবং বিচারপতি বিকাশ জৈনের ডিভিশন বেঞ্চ। ইতিমধ্যে আগামী ২০ তারিখ জিতনরামকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলেছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

দলের নির্দেশ মেনে জিতনরাম মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা না দেওয়ায় গত শনিবার জেডিইউ বিধায়কদের একাংশের বৈঠকে নীতীশকে পরিষদীয় দলনেতা বেছে নেওয়া হয়। ওই দিন বিকেলে নীতীশকে পরিষদীয় দলনেতার স্বীকৃতি দিয়ে স্পিকারের সচিবালয়ও বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কিন্তু পদাধিকার বলে মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম এখনও বিধানসভার নেতা। এ নিয়েই হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বিধায়ক রাজেশ্বর রাজ। সেই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত আজ জানিয়েছে, স্পিকার কী ভাবে নীতীশকে ওই পদে স্বীকৃতি

দিলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের উপরে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি। স্পিকারের বক্তব্য, “আদালত কী বলেছে তা জানি না। আমি বিধানসভার আইন মেনেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”

বিধায়ক রাজেশ্বরের যুক্তি, “জিতনরাম এখনও মুখ্যমন্ত্রী। তিনি থাকতে অন্য কেউ কী ভাবে পরিষদীয় দলনেতা হতে পারেন?” নীতীশ মন্ত্রিসভার প্রাক্তন মন্ত্রী পি কে শাহির পাল্টা যুক্তি, “বল এখন রাজ্যপালের কোর্টে। আমরা তাঁকে ১৩০ জন বিধায়কের সমর্থনপত্র দিয়ে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ চেয়েছি।” আজ আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ, সপা নেতা মুলায়ম সিংহের পাশাপাশি ওই ১৩০ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন নীতীশ। রাইসিনা পাহাড় ছাড়ার সময়ে তিনি জানান, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁরা আবেদন করেছেন।

নীতীশের কথায়, “সমর্থন যে আমাদের পক্ষে রয়েছে, সেই কথাই রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে।” আজ অবশ্য নীতীশকে আক্রমণের নতুন রসদ পেয়েছে বিজেপি। সদ্য দিল্লিতে পর্যুদস্ত হওয়ার পরে বিহার বিধানসভা ভাঙার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না নরেন্দ্র মোদী-রা। তবে দলীয় নেতাদের রাজনৈতিক ভাবে নীতীশের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, দিল্লিতে যেমন বিজেপি-বিরোধী ভোটের কার্যত পুরোটাই আম আদমি পার্টির ঝুলিতে গিয়েছে, বিহারে যাতে তেমন না হয় তার প্রস্তুতি শুরু করেছেন সভাপতি অমিত শাহ।

বিহারে ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা নীতীশ-লালু-কংগ্রেস ও বাম দলগুলি। জিতনরামের পাশেই পূর্ণ শক্তিতে দাঁড়াতে চাইছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন আজ অবশ্য কিছুটা রেখেঢেকেই বলেছেন, “সব পথ খোলা।

জিতনরাম ও নীতীশ দু’জনেই নিজেদের পক্ষে সমর্থন দাবি করছেন। ফয়সালা হবে বিধানসভায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nitish kumar patna high court bihar assembly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE