Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

হাবাকের পর ইয়াসিন, ক্যামেরা ফেলে আহত ছাত্রীকে বাঁচালেন চিত্র সাংবাদিক

সিরিয়ার চিত্র সাংবাদিক আব্দ আলকাদের হাবাক পথ দেখালেন, আর সেই পথেই হাঁটলেন জম্মু-কাশ্মীরে কর্মরত এএফপি-র চিত্র সাংবাদিক দার ইয়াসিন।

দার ইয়াসিন। চিত্র সাংবাদিক। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

দার ইয়াসিন। চিত্র সাংবাদিক। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ১৮:৪২
Share: Save:

সিরিয়ার চিত্র সাংবাদিক আব্দ আলকাদের হাবাক পথ দেখালেন, আর সেই পথেই হাঁটলেন জম্মু-কাশ্মীরে কর্মরত এএফপি-র চিত্র সাংবাদিক দার ইয়াসিন।

বৃহস্পতিবার শ্রীনগরের নওয়াকাদালে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পথে নেমেছিল এক দল স্কুল পড়ুয়া। প্রতিবাদ চালাকালীন একটা পাথর সজোরে এসে কপালে লাগে খুশবু জান নামে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর। সেও ওই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল ছিল। পাথর লাগার সঙ্গে সঙ্গেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে খুশবু। তার এই অবস্থা দেখে অন্য পড়ুয়ারা বেশ ভয় পেয়ে যায়। কী করবে বুঝে উঠতে না পেরে সাহায্যের জন্য চিত্কার করতে থাকে। প্রতিবাদ সামলাতে আসা বেশ কিছু পুলিশ দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। সঙ্গে ছিলেন এই খবর কভার করতে আসা গুটি কয়েক সাংবাদিক। যাঁদের মধ্যে এক জন ছিলেন ইয়াসিন। ওই দৃশ্য চোখে পড়তেই কোনও কিছু না ভেবে ইয়াসিন দৌড়ে যান খুশবুর কাছে। তাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে দৌড়তে থাকেন। কাছেই একটি গাড়ি দেখে তাতে খুশবুকে তুলে সোজা হাসপাতালে পৌঁছন ইয়াসিন। তিনি যখন খুশবুকে কোলে তুলে নিয়ে দৌড়চ্ছিলেন, ঘটনাস্থলে থাকা এক তরুণ সাংবাদিক ওই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন। ইয়াসিনের এই ছবিই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। অনেকেই তাঁকে সিরিয়ার চিত্র সাংবাদিকের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করে দিয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় খবর কভার করতে এসেছিলেন আবেদ আলকাদের হাবাক। বিস্ফোরণস্থল থেকে দুটো বাচ্চাকে উদ্ধার করেছিলেন তিনি। যদিও এদের মধ্যে এক জন বাঁচেনি। এক জন পেশাদার সাংবাদিক হলেও আবেদের কাছে তখন ওই শিশুদের বাঁচানোই প্রধান কাজ মনে হয়েছিল। বাচ্চাটিকে বাঁচাতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: অনিচ্ছাকৃত ভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা অপরাধ নয়, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

খুশবুকে হাসপাতালে ভর্তির পর ইয়াসিন বলেন, “মেয়েটির বন্ধুদের বলেছিলাম খুশবুর মতো আমারও দুটো মেয়ে আছে। ও আমার মেয়ের মতোই। কোনও সন্তান যখন যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে এক জন বাবা হয়ে কি সেই দৃশ্য দেখা যায়!”

২০০২ থেকে কাশ্মীরে কাজ করছেন ইয়াসিন। ১৫টি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন কাজের জন্য। তিনি বলেন, “এমন একটা কাজ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে। ছবি তো পরে অনেক করতে পারব। কিন্তু ওই সময় মেয়েটির সাহায্যের প্রয়োজন ছিল।”

যখন তাঁর এই কাজ নিয়ে চার দিকে প্রশংসার ঝড় বয়ে গিয়েছে, খুব শান্ত ভাবে ইয়াসিন জানান, এটা নতুন নয়, এর আগেও তিনি এমন কাজ করেছেন। শুধু তিনি কেন, কাশ্মীরে অনেক সাংবাদিকই এমন কাজ করে থাকেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE