Advertisement
E-Paper

কৌশল ছেড়ে রাজনীতির মাঠে প্রশান্ত

নীতীশের নেতৃত্বে মহাজোট বিহার বিধানসভা ভোটে জেতার পরে পটনার ১০ সার্কুলার রোডের বাড়িতে বসে তাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, ‘‘রাজনীতিতে কবে আসছেন?’’ কালো ফ্রেমের চশমাটা খুলে পাঞ্জাবিতে মুছে খানিক কৌতুক আর খানিক রহস্য মিশিয়ে বলেছিলেন, ‘‘উত্তরের জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।’’

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৪
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নীতীশের নেতৃত্বে মহাজোট বিহার বিধানসভা ভোটে জেতার পরে পটনার ১০ সার্কুলার রোডের বাড়িতে বসে তাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, ‘‘রাজনীতিতে কবে আসছেন?’’ কালো ফ্রেমের চশমাটা খুলে পাঞ্জাবিতে মুছে খানিক কৌতুক আর খানিক রহস্য মিশিয়ে বলেছিলেন, ‘‘উত্তরের জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।’’

তিন বছর পরে উত্তর দিলেন প্রশান্ত কিশোর। আজ নীতীশ কুমারের হাত ধরে বিহারের রাজনীতিতে যোগ দিলেন নির্বাচনী-কৌশলকার। মোবাইলে বললেন, ‘‘এ বার থেকে নিয়মিত কথা হবে। সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ায় দায়িত্ব বেড়ে গেল অনেকটাই।’’ আর নীতীশ কুমার বলছেন, ‘‘আমি বলছি শুনুন, প্রশান্তই ভবিষ্যৎ।’’

বিহারের বক্সারের ছেলে প্রশান্ত। আফ্রিকায় রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বাস্থ্য বিশেষ়জ্ঞের দায়িত্ব ছেড়ে ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসেন। তার পরেই তরুণ পেশাদারদের দল তৈরি করে গুজরাতে সুশাসনের প্রচার শুরু করেন। সেই দলের বেশির ভাগই ছিলেন আইআইটি-আইআইএমের স্নাতক। গুজরাতে ২০১২ সালে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় ফেরার পিছনে প্রশান্তের দলের প্রচারের বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করেন অনেকেই। এর পরে সেই দল নিয়েই জাতীয় স্তরে প্রচারের কাজ শুরু করে দেন নরেন্দ্র মোদী। ‘চায়ে পে চর্চা’র সাড়া জাগানো প্রচারের ডিজাইন করেছিলেন প্রশান্তের দলের সদস্যেরাই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তার ফল হাতেনাতে পান মোদী। ঠিক এর পরেই মোদীর হাত ছেড়ে দেন প্রশান্ত। বিজেপি সূত্রের মতে, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে প্রশান্তের বনিবনা হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই মোদীর সঙ্গ ছাড়েন প্রশান্ত।

নীতীশ কুমারের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোর। পটনায়। ছবি: পিটিআই।

মোদীর সঙ্গে বিরোধের কথা জানার পরে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে নীতীশ কুমার প্রশান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২০১৫ সালের মার্চে নীতীশের জন্য নির্বাচনী কৌশল তৈরির দায়িত্ব পান প্রশান্ত। জেডিইউয়ের সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বে থাকা নেতারা ক্ষুব্ধ হন। কেউ কেউ দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদীর প্রচারের অন্ধ অনুকরণ করছেন প্রশান্ত! প্রথমে ‘পর্চা পে চর্চা’ বা ‘ঘর ঘর দস্তক’ প্রচার করে তৃণমূল স্তরের খবর তুলে আনেন। নীতীশ কুমারের জন্য এলাকাভিত্তিক প্রাধান্য দিয়ে বক্তৃতা তৈরি করে দিয়েছেন। যাতে প্রতিটি মানুষের মনে হয়, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কথাই ভাবছেন। নীতীশের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের জয়ের পথ তৈরিতে সেটা অনেকটাই সাহায্য করেছিল বলে মেনে নেন জেডিইউ নেতারাই।

এর পরে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে নামেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে সফল হননি। তবে পঞ্জাবে প্রবল প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং আম আদমি পার্টিকে রুখে দিয়েছেন। তাঁর রণনীতিতে বিপুল জয় পেয়েছে ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। তার পরে ছিলেন দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে। সেখানেও কাজে সফলই হয়েছেন। কিন্তু এ বার অন্য রূপে বিহারের মাঠে নামছেন প্রশান্ত। এখন আর পিছন থেকে কলকাঠি নাড়া নয়, রাজনীতির ময়দানে সামনের সারিতেই দাঁড়াতে হবে তাঁকে।

Prashant Kishor Nitish Kumar JD(U) BJP প্রশান্ত কিশোর নীতীশ কুমার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy