Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Ranjan Gogoi

যৌন নিগ্রহ কাণ্ডে ক্লিনচিট প্রধান বিচারপতিকে, প্রতিবাদে বিক্ষোভ সুপ্রিম কোর্টের বাইরে

গত ১৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানান ওই মহিলা।

এ ভাবেই বিক্ষোভকারীদের ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: পিটিআই।

এ ভাবেই বিক্ষোভকারীদের ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ১৪:৩৫
Share: Save:

যৌন নিগ্রহকাণ্ডে প্রধান বিচারপতিকে ক্লিনচিট দেওয়ায় এ বার তেতে উঠল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল আইনজীবী। তাতে সামিল হন বহু মহিলা সমাজকর্মীও। দিল্লি পুলিশ বিক্ষোভ থামাতে গেলে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। তার জেরে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বিক্ষোভের সময় ঘটনাস্থলে হাজির কয়েকজন সাংবাদিককেও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় দিল্লি পুলিশের একটি দল। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। যার পর একরকম জোর করেই বিক্ষোভকারীদের ভ্যানে তুলতে শুরু করে পুলিশ। সেখান থেকে মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সেখানেই আটক করে রাখা হয়।

তবে দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক মধুর বর্মার দাবি, সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের মতো সংবেদনশীল জায়গাগুলিতে সারা বছর ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তা লঙ্ঘন করেই এ দিন সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তা সত্ত্বেও শুরুতে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সরিয়ে নিয়ে যেতে আর্জি জানিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বিক্ষোভকারীরা। তাই তাঁদের আটক করা হয়।

আরও পড়ুন: মরে গেলেও বিজেপির স্লোগান আমার মুখ দিয়ে বেরোবে না, রানিবাঁধে বললেন মমতা​

বিক্ষোভের পর আদালত চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া উইমেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যানি রাজা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যে পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে ক্লিনচিট দিয়েছে, তাতেই আপত্তি তাঁদের। অভিযোগকারিণী তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন ওই মহিলা কর্মী প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।

গত ১৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানান ওই মহিলা। তিনি জানান, জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই সময় ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে প্রধান বিচারপতির বাড়ির অফিসে কাজ করার দায়িত্ব পান। সেখানে তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন প্রধান বিচারপতি। প্রতিবাদ করলে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হয়।

আরও পড়ুন: মাসুদকে ছাড়ের বদলে ওবর-এ দিল্লিকে চায় চিন​

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ যদিও শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন বিচারপতির বিশেষ কমিটি তৈরি হয়। তাতে দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি বোবদে ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মহিলার অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই বলে সোমবার গগৈকে ক্লিনচিট দেন তাঁরা। তার পরই এ দিন বিক্ষোভ শুরু হয় আদালতের বাইরে।

ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা নেই বলে এর আগে তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। সোমবার গগৈ ক্লিনচিট পাওয়ার তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে বিরাট অন্যায় হল। বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারানোর মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমি।’’ তবে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE